Friday, 5 January 2018

হিমেল মাসের কবিতা ২৩

Image result for abstract painting vietnam

এন.আর.সি মিডনাইট,  ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭
                                      -সুতপা চক্রবর্তী 

টুকরো করে রাখা আঙুলে নুন হলুদ মাখাই
দমে রাখি মিনিট পাঁচেক

পোড়া গন্ধে লাশ হয়ে ওঠে ক্ষুদিরাম মূর্তির আবহাওয়া, ভাষা শহীদ স্টেশন, 
আর আমার
উনান এর পড়শিরা

চিমটি কেটে কালোজিরে ছিটুই তাতে
গরম বাটি, থালা স্লোগান শোনায়

বিদ্রোহ করে!


কাটা আঙুল নিমিষে লালমুচমুচে


আ   লু    ভা   জা!

(ছবিঃ লে হিউন লাম) 

হিমেল মাসের অনুবাদ কবিতাঃ মেক্সিকো থেকে রোজি ইভিলিন লিমা


Image result for rossy evelin lima



ভাঙা হাড়
        -রোজি ইভিলিন লিমা 

আমি এক সুন্দরী ভাঙা মহিলা,
আমার অস্ত্র তিন স্তরে বিভক্ত।
আমার স্বাধীন দেহ জাগ্রত,
নিখুঁত আকার আমার দেহ,
আমার ধাঁধা একটি গুপ্তধনের থলি, অবারিত এক থলি
প্রতিহত এক তৃষ্ণায় তা আমি ধরে থাকি
আমার পায়েরও তিনটি খন্ড
আমার অপরিচিত মন্দিরের ত্রিকোণমিতি
টুকরো হয়
                         তাদের থামানোই যায় না

তারা সমুদ্রের স্রোত
এবং তারা ইচ্ছামত ভেসে যায়
আমার আবদ্ধ হাত জড়িয়ে যায় হরিণের শিং-এ
রোপিত বৃক্ষকান্ড
যা খনন করে ফেলে নিজস্ব পথ
হাত এতটাই বন্ধনমুক্ত
আমি এক ছিন্নমস্তা
এক মহীয়সী ছিন্নমুন্ড মহিলা
আমার মাথা আসলে স্তূপমেঘ
কেননা আমি রানী
এবং আমার শরীর সাম্রাজ্য।
আমি
                 প্রসারিত হই
                                             সীমাহীন,
যা আমার সমস্ত সার্বভৌমত্বেই খালি হয়
শিকল যা একবার আমাকে জড়িয়েছিল
আমার হাড়ের ভেতর ভেঙে যায়।
আমি মুক্তিপ্রাপ্ত নারী,
দাসত্ববন্ধনহীন আমি।


(রোজি ইভিলিন লিমার জন্ম ১৯৮৬ সালের ১৮ অগস্ট, মেক্সিকোর ভেরাক্রুজ শহরে। সংস্কৃতিবান এক পরিবারে বেড়ে ওঠার ফলে মাত্র ছ'বছর বয়স থেকেই কবিতা লিখতে শুরু করেন রোজি। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পত্রিকায় লেখার পাশাপাশি কলেজ জীবন থেকেই বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। যথেষ্ট আলোচিত এবং সমালোচিত এই কবি একাধিক আন্তর্জাতিক পুরষ্কারে ভূষিত।) 

(কবিকৃত ইংরেজি অনুবাদের মধ্যস্থতায় এই অনুবাদ করা হল। ) 

(ছবিঃ এদোয়ার্দ বিদাউরে)




হিমেল মাসের কবিতা ২২

 Image result for abstract painting by bengali painter

পৌষালি.... 
       -নীলাদ্রি বাগচী

ক.
নিহিত অর্থের ভুলে সান্নিধ্য, নৈকট্য- গতানুগতিকে ভিন্ন এই আঠারো ঘন্টার অর্থ আঠারোটি জন্মদিন। পোশাকে বা আস্তরণে তার কোনো বুনন হয় না। স্মৃতি শুধু গন্ধ চায়, সম্ভবত অকারণ, সম্ভবত সানসিল্ক ব্ল্যাক। অন্যমনস্ক শব্দের গোড়া ধরে নেড়ে গেছে পহেলা পৌষ। গাঢ় শীত জমা হচ্ছে ভেতরে ভেতরে। কাঁপুনির সাথে থাকা কয়েক মূহুর্ত আজীবন স্থির করে দেয়। আরও শীত জমা হবে এরকম কৃতার্থ সময়ে। জমা হবে অনেক বিস্ময়।
অন্নপূর্ণা স্বহস্তে অন্ন তুলে দিয়ে গেলে এভাবেই জন্মদিন... এভাবেই বারবার আনন্দ ও সম্মিলন, পূনর্গঠিত এক বোধ...

খ.

আমার সঙ্কোচ সাথে তুমি ফিরে গেছ অবশিষ্ট জন্মদিন ধরে। সেই থেকে গুছিয়ে চলেছি। যা দেখি তাইই এলোমেলো লাগে। ফলে গোছানো। অগোছালো আরও দ্রুত আক্রমণ করে। ফলে অবিন্যস্ত। এইভাবে বছর কেটেছে। স্মৃতি ধরে হেঁটে আসা মুখ পাশ ফেরতা সময়ে মিশেছে। টগর ঝরেছে। শেষ চাঁপাটাও। এখন পূর্ণমান দিনে নতুন সংখ্যা লেগেছে।
ঠিকানা পাঠিও। আমি পত্রযোগে কুশল জানাব....

(ছবিঃ জানিকা ট্যাল্টস) 

হিমেল মাসের কবিতা ২১


Image result for abstract painting by bengali painter


ডাক 
      -অভিশ্রুতি রায় 


আসলে সবটাই রোদের মতো
পিছু পিছু কণাবাদী
পিছুপিছু রৌদ্রটান..
টানের উপর দিয়ে জন্মদাগ লেপ্টে দিয়ে যাও
আমার যা কিছু দাগ
সবই আলতায় ভিজে যাওয়া
দ্রুতগামী...
ছুটন্ত  ঘোড়ার পেছনে আশাবাদী
আলগা সুতো দিয়ে জাদুকর হয়ে ওঠে

(ছবিঃ আউগুস্তে হের্বিন) 

হিমেল মাসের কবিতা ২০

Image result for abstract painting by jose joya

চিত্র প্রদর্শনী 
         -শমীক ষান্নিগ্রাহী


১।
আলো নিয়ে যে সব কথা বলা হচ্ছে
তার পেছনে অন্ধকার দাঁড়িয়ে থাকে
আমি গান লিখি বলে
এখন আমাদের খুব কাছাকাছি আসা প্রয়োজন
বিকেল নিয়ে দু’একটা লাইন লিখে ফেলে কেউ কেউ

হাঁটতে হাঁটতে তারপর কত গান হয়ে যাই


২।
মেয়েদের বিষয়ে আমি তেমন কিছু জানি না
চিঠির বদলে বন্ধুরা হাত ধরে হাঁটা দিল
তুমি হাঁপিয়ে উঠছ
প্রেমিক নামে বাগানের ভেতর

স্মৃতি নিয়ে লিখতে বসে তাই
সামান্য রোদ পড়ছে জানালায়


(ছবিঃ রোডলফো সামোন্তে) 

হিমেল মাসের কবিতা ১৯




হৈমন্তী
       -পুরঞ্জয় তন্তুবায়


তোমার চোখেই বাঁধ ভেঙেছে রাত
নিরুদ্দেশে ঠিকানা যায় ভেসে,
পালকি ভেঙে আঁধারে ঝঞ্ঝাট
জড়ায় তোমায়।পুরণো অভ্যেসে।

তোমার মনেই সেতুর সুতো জানি
অনেকটা পথ গড়েছে একপলে।
বিভেদী প্রেম,সাজানো ফরমানি
দূরত্বকে ছোঁয়ার কথা বলে।

তোমার শরীর বাদল বিভোর বেলায়
একাকীত্বের আকাশ মাপা জল,
সেতুর পরেই বন্যা অবহেলায়
বানভাসি মন।আবছায়া অঞ্চল।

প্রতিচ্ছবি। আয়না-হৃদয়।স্মৃতির
রাত বলেছে আর যাব না ভেসে।
জাগ্রত মন শিশিরে অস্থির
এক পা দু'পা। তোমারই উদ্দেশে।

কিন্তু তাতে ঢেউ ছিল কি আদৌ?
বাতাসে যার হৃদয় গোণা হয়!
আয়না-হৃদয়, প্রতিচ্ছায় আস্বাদও
নিমজ্জিত নদীর মতো নয়।

তবুও তোমার চোখেই যেন ধরা
একমুঠো রাত।তন্বী শতদল।
সেতুর এপার দাঁড়িয়ে মুহূর্তরা
আর ওই পারে আয়না ভাঙা জল।

(ছবিঃ গ্লেন বাওতিস্তা) 

হিমেল মাসের কবিতা ১৮




বিক্ষিপ্ত
          -কৃপা বসু 

১.
ঈশ্বর ভেবে পাথরের বুকে পুঁতে দিই তুলোর চারা।

আদরের নখে কেটে যায় ঘাসের শরীর।

পিলসুজে গেঁথে রাখি ব্যথার মলম,
ছাই দিয়ে মেজে ফেলি দাঁতের গোড়া।

২.
অনেকখানি নিঃস্ব হলে কবিতারা
চুঁইয়ে পড়ে ব্রহ্মহস্ত থেকে ধুলোর কাগজে,
কুলোর শরীর বেয়ে নেমে আসা চালের মতো।

নিষ্কাম বালিশ জেগে থাকে ঘিলুর ভেতর।
ছাদের তারে মেলা বিধবা থান
স্নেহ-উলে ঢেউ বুনে চলে তবুও।

সাদা পাউডার ভেবে মেখে ফেলি
ফরমালডিহাইডের গুঁড়ো,
কাঁটা বেছে হাওয়ায় ভাসে তোমার আমার গোলাপকোঠা।

৩.
ময়ূরের মুরালির তালে ময়ূরীর বুক
থেকে খসে পড়ে জলের লেহাজ।

জিভের নীড়ে গজায় প্রেমের শিকড়।
ফুলেল দোলনার পাশে নুয়ে থাকে শিশিরের ঘ্রাণ।

জামরুল বন পেরিয়ে যায় আলোর সাম্পান,
সাপের পোশাকে জেগে থাকে শীতের রোয়াব।

(ছবিঃ পিটার দানিৎসিন) 

হিমেল মাসের কবিতা ১৭

Related image

প্রেম ও ঈশ্বর
             -অনু সঞ্জনা ঘোষ

আজ সারাদিন ভিজিয়ে গেছি নিজেকে। রাত অবধি গড়িয়েছে সকাল। বৃষ্টি ভিড় করা সমুদ্র আমার না। নিজেকে গুটিয়ে নিয়ছি। যাবতীয় শীত শুষে নিয়েছে ঝিনুক। আমি ঈশ্বর বুঝি না। ঐশ্বরিক বলতে যা কিছু তা পুরোটাই ধবধবে।

ঝুঁকে পড়ে আল্পস। পাতাদের শরীরে আঁচড় নেই বর্ষার। অথচ বৃষ্টি জানে শিকড়ের গান। গাছ, গাছ শব্দে ভরে ওঠে জীবন। স্বপ্নে তুমি গাছ।
অন্যের উঠোন...


(ছবিঃ শ্রীধর আইয়ার) 

হিমেল মাসের কবিতা ১৬

Image result for abstract painting indian artist

ঋতু
     -সুদীপ গুপ্ত


শীত গড়িয়ে শরীর হয়েছে
গঙ্গা যমুনা

হাওয়া তো সিজোফ্রেনিক
ঘাড় ঘুরিয়ে আঁধার নেমে এল

প্রাগৈতিহাসিক


(ছবিঃ অনিতা তিওয়ারি) 

হিমেল মাসের কবিতা ১৫

Image result for abstract painting indian artist

বিকার 
        -জয়ীতা ব্যানার্জী গোস্বামী 

এভাবেই বসে আছি কতক্ষন ...

একটা জ্বরের মত দিন । চোখ জ্বলা আলোর উঠোনে -

হলুদ পাতার হাতে জলপটি শুকিয়েছে । সারি সারি ব্যথাগাছ ।


অচেনা পাখির সাড়া পথ্য হতে পারত যদিও...

অথচ এসব কিছু না ভেবেই শুধু  কবিতা পড়েছি বহুকাল ।

(ছবিঃ জিগ্নেশ পাঞ্চাল) 

হিমেল মাসের কবিতা ১৪

Related image

আলো
     -জয়শ্রী ঘোষ

সারা দিন খেলা ঘর, এলো চুল, অযথা বাজে বোকাবাক্স ,টেলিফোন  ১টা ২ টো ৫টা রিং
ও কিসের শব্দ  ?

ব্যথাই ওষুধ
কান্না ব্যথাই

প্রেমিক আকাশ আর টিমটিমে আলোকে ধরে নিই সূর্য
বেত রাখা আছে, ভয় হয়      চিরসখা
রোদ মাখি ভেবেছিলাম শীত, কাঁচে বিন্দু শিশির
ফেংশুই বাজে টুংটাং

হাঁড়িতে ফুটছে ভাত 
 সাদা সাদা
কড়িকাঠে লেগে আছে চুরির দাগ

সাইরেন বেজেছে যত পারদ বাড়ছে ততই

মুখ ভার করেছে জ্বর

খোলা পিঠের কারুসাজে বিগত রক্তের দাগ

(ছবিঃগণেশ ডোড্ডামনি)

হিমেল মাসের কবিতা ১৩

Image result for abstract painting indian artist

অন্ত্যেষ্টি
      -জয়া গুহ

অন্ধকারে ছলাৎছল জল আর ফিরে আসা নূপুর একত্রে সাবধানতার বীজমন্ত্র উচ্চারণে
যারা ছিল তারা আর নেই
নদী-জমিনে গল্প থেকে গেছে
কারা কবে ভালোবেসেছিল
ও পাড়ার নটবর এ পাড়ার বিধবা হৈমবতী একসাথে ডুবে মরেছিল.. তার
খাইরুল এর চাচী নাও উঠিয়ে প্রথম নাও-বাওয়া শিখল.. তার
মাঠের কাজ সারতে ভুটভুটি চেপে কিছুটা,বাকিটা হেটেই
পঁচাত্তর নম্বর লাটে যেতো আমিনা-মকবুল
ফেরার পথে ফেরিঘাটের পাশে দর্মার দোকানে খেয়ে নিত, বাটা মাছের ঝাল আর পোস্ত
যার মধ্যে পোস্ত উচ্চারণে আর ফোড়নে
  ওষধির মত সংরক্ষণ শিখে আমাদের ভালোবাসা, অরুণাভ
এর চেয়ে বেশী,ভালোবাসাবাসি লেখেনি কোথাও কোনো খসড়ায়
অরুণাভ! আজ পৃথিবীটা আমার ক্রমশ বড়ো হয়ে আসছে
আমি কতদূর দেখছি,কত আগে মাপছি
ভোর হতেই দেখলাম বাড়ির উঠোনে মেলা লোক জমা
কেউ কানাঘুষো, কেউ চোখে জল
কেবল নিজেকে খুঁজে পাচ্ছি না কোত্থাও
যেমনটা তোমার শরীরে মিশিয়ে নিয়ে মনে হয়েছিল, ঠিক তেমনটাই
ও কে! ওরা কারা!
 তুলসীতলায় অবিকল আমার  মত
চোখ বোজা,চন্দনে, ধূপে, ফুলে সমারোহ
অরুণাভ! এত আগুন! অথচ আমি শুদ্ধ হলাম কই?

(ছবিঃ গোপাল মহান) 

হিমেল মাসের কবিতা ১২

Image result for abstract painting indian artist

শরীরের লেখা
                -দীপান্বিতা সরকার

       ১
তোমার কলম বিঁধে আছে
এখনও মগজে। নাকি বাঁশি ?
কোন দিকে বিগ্রহের শিলা ভাসে বুকে
প্রতিটি মুদ্রায়, সাঁকো বেয়ে
নেমে আসে দেহরন্ধ্র সূচের নেশায়
পাতো নদী গন্ডগ্রাম জখম সকাল
আলোপট জুড়ে জুড়ে লেখা
 বেখেয়াল খিদে তবু পথে যেতে যেতে
স্মরণ করেছ মাত্র অমনি দেখো কার
একটি দুটি বৃন্ত খসে পড়ে


ঈশ্বর গিয়েছে ফেলে বীর্য অপরূপ
সূর্যাস্তে চেতনাফুল রঙ ধরে আকাশে আকাশ
ছেয়ে মরে গেছে  ডুবে গেছে যত নৌকা
অদৃষ্টের দায়ভার কার ?
শয্যাভঙ্গি ছুঁয়ে এসো লন্ঠনের আলো
ক্ষীণ অতি ক্ষীণ আঙুলের ভারে
উন্মাদ রমণ-ছায়া
মাটির দেয়াল চিরে ঠোঁট জিভ ঘষে

 ৩
সহজে বেঁধেছ গান
গানের শরীর, মুখ বাঁধো চোখ বাঁধো গো লজ্জায়
প্রেমের শাস্তিও শুধু আজ তাকেই মানায়



(ছবিঃমার্সিয়া বল্ডউইন) 

হিমেল মাসের কবিতা ১১

Related image

সাম্প্রতিক যা বলতে চেয়েছি 
                  -রঙ্গন রায়


আমার মাঝে মাঝে বমি পায় ,
ভীষণ বমি করে ফেলতে ইচ্ছে করে
অথচ বমি করতে গেলেই জোর করে
ওষুধ গিলিয়ে দেয় , আমি কোথায় যাব আঁধার?
কাকে বলবো আমার এ অসুখের কথা।
মাঝে মাঝে তো আমরা লিখতেও পারিনা ,
তোমার কথা - আমার কথা
আমাদের বমি করে ফেলবার কথা ...
একটা কেমন অস্বস্তি হয় বুকে , মনে হয়
প্রখর খরা চলছে যেন , কিন্তু এখন শীতকাল।
একটাও শব্দ ফেলবোনা বলে মা
প্লাস্টিক ধরিয়ে দিয়েছে  হাতে , বলেছে
বমি যেখানে সেখানে করতে নেই ;
কিন্তু সেই সাত বছরের মেয়েটির যোনীদেশ থেকে
যে চাপচাপ রক্তের দাগ নেমে এসেছে
এই শীতের ফুটপাতে ...
আমি কি এসব দেখেও বমি করতে পারবোনা
যেখানে সেখানে?
আমাকে কি পুলিশ ধরবে? বেদম প্রহার করে
হত্যা করবে রাষ্ট্রযন্ত্র?
আমার লিফলেটটি ছিঁড়ে ফেলেছে সবাই ,
কিন্তু আমাকে বেঁচে থাকতেই হবে
বমি করার মত একটা উপযুক্ত স্থান
খুঁজে বের করাটা আমার মনে হয়
বেঁচে থাকার স্বার্থকতা -
আমি এই রক্তমাখা পৃথিবীর মধ্যে
একাই বিড়বিড় করবো , জীবনের কথা বলবো
ভালোবাসার কথা বলবো , তুমি বলো আঁধার
তোমার কথা - আমার কথা - আমাদের বেঁচে
থাকার কথা



(ছবিঃ ফের্নেন্দো দে সিজলো) 

আশ্চর্য্য ধারাবাহিকঃ হারিয়ে যাওয়া নব্বই- পর্ব ৬

Related image

‘আমার বন্ধুরা আমারই চারপাশে মাটির জল শুষে বেড়ে উঠছে’
রামাশিস অধিকারীর কবিতা 
-অনিন্দ্য রায়

নব্বইয়ের শুরুতে পুরুলিয়ায় আমারই বয়সী কয়েকজন কবিতা নিয়ে একত্রিত হচ্ছিল এবং আদের অভিভাবক ছিলেন সেই শহরের অগ্রজেরা । ‘ছাতিমতলা’ পত্রিকাকে ঘিরে তাদের আড্ডা, তাদের বেড়ে ওঠা । তারা অচিরেই আমার বন্ধু হয়ে ওঠে, কবিতার বন্ধু, যদিও মুখোমুখি দেখা যে সবার সঙ্গে হয়েছে এমন না। কিন্তু বন্ধুত্ব, হ্যাঁ, পরস্পরের লেখা পড়ার, সে লেখা নিয়ে ভাবার, একই পত্রিকায় লেখার বন্ধুত্ব, যেরকম হত আরকি সেই নব্বইয়ে।
রামাশিস সেরকমই বন্ধু আমার ।
রামাশিস অধিকারী । তার কবিতায় এক সহজযাপন, সরাসরি মানুষের কথা, মানুষদের কথা, পুরুলিয়া ও তার জলবায়ু উচ্চারিত হত।
অন্ধকারে জন্ম
অন্ধকারেই আমাদের বেড়ে ওঠা

অতীত হারিয়ে গেছে অন্ধ গুহায়
অন্ধকারে কোন্‌ সে আগামী

তবু
আমাদের হাত
কেবলই আগুন ছুঁতে চায়
( এই জন্ম )
এই কবিতা দিয়ে শুরু তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ, ‘এই জন্ম’। প্রকাশকালঃ জানুয়ারি, ১৯৯৯। প্রকাশকঃ ছাতিমতলার পক্ষে কিশোরকান্তি দাশ। প্রচ্ছদঃ প্রদীপ সিংহ। বিনিময়ঃ পাঁচ টাকা।
১৬ পৃষ্ঠার বই, মোট ১২টি কবিতা।
উৎসর্গঃ মা ও বাবিকে।
মা এই ভাবনাটি রামাশিসের কবিতায় আমরা সেখি দারিদ্রের পটভূমিকায় । ভূপ্রকৃতিগতভাবে পুরুলিয়া জেলায় যেটুকু বৃষ্টিপাত হয় তা নদী বেয়ে অন্য জেলায় বয়ে আসে। আর সেই জেলা নিজে রয়ে যায় রুক্ষ, সে জেলার সন্তানেরা পিপাসার্ত। রামাশিস লেখে
অন্যের হেঁসেলে ভাত ফোটাতে ফোটাতে
তুমি ভাবো
তোমার ঘরে ভাত ফোটেনি কতদিন
তোমার ছেলেটা কখন একা একা
ধুলোমাটি নিয়ে খেলতে খেলতে ঘুমিয়ে পড়েছে
তখন তুমি কাকে কোলে নিয়ে
মুখে তুলে দাও দুধের বাটি

তোমার হাত কি কাঁপে মা
বুক কি ভেঙে আসে কান্নায়
( মা )
এই অভাবের মধ্যেই, অস্বচ্ছলতার মধ্যেই বেঁচে থাকার লড়াই, বড়ো হওয়ার লড়াই। এই লড়াই পুরুলিয়ার মাটিতে যে কোনো সৃজনে মেতে থাকা যেকোনো মানুষের চূড়ান্ত সংগ্রাম । মহানগরের ক্লেদ, চাতুর্য, সম্পত্তির ব্যক্তিমানিকানা নিয়ে বিভেদ ও সংঘাত থেকে কিছু সাধাসিধে মানুষের নিষ্কলুষ বেড়ে ওঠা, কোনো কিছুকে দখল করতে নয়, আগ্রাসন নয়, বড়ো হওয়া ।
কোনদিন আকাশ দেখে মনে হয়নি
আকাশটা আমাদের
আকাশ দেখে ভয় হয়, হয়ত হারিয়ে যাব
খুঁজে পাব না আমাদের পথ

তারাদের দেখেও মনে হয়নি আমার বন্ধু
আমার বন্ধুরা আমারই চারপাশে
মাটির জল শুষে বেড়ে উঠছে

তবু ;
তারা ও আকাশের দিকে
আমাদের প্রতিদিন বেড়ে ওঠা
                        ( বৃক্ষবাসনা )
এই বাসনা নিয়েই তো তার আশেপাশের মানুষজন, তার বন্ধুরা, ‘ চারপাশে মাটির জল শুষে বেড়ে উঠছে’। তাদের নিয়েই তো রামাশিসের বেঁচে থাকা, রামাশিসের কবিতা। সে কবিতা ভনিতাহীন, সে কবিতা নাগরিক অনুকরণ নয়, মোহিনী আড়াল নয়, জীবন, তরতাজা জীবন, আগুনে সেঁকে নেওয়া প্রাণ ।

খেলনা গাড়ী, ব্যাট-বল ওদের জন্য নয়
চারপাশে প’ড়ে থাকা নোংরা কাগজ আর
টায়ারের টুকরো জড়ো করে
ওরা আগুন জ্বালে ।

আগুন ফনা তোলে
আগুন নেচে নেচে ওঠে ।
(শৈশব )

রাত্রি বাড়ার সাথে সাথে
ফুটপাতেও দৃশ্য বদল হয়
সারা দিনের ব্যস্ত বাণিজ্য শেষে
ফুটপাত হয়ে ওঠে  এক একটা রান্নাঘর

ভাত ফোটে

শুকনো ডাল পালার সাথে তাদের
কালো রোগা হাত পা গুলোও যেন
সেঁধিয়ে যায় আগুনের ভেতর

ভাত ফোটে
           ( জীবন )
এই জীবনের সাথেই ত আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল সে, রামাশিস, আমার বন্ধু ।
আমার সাথে তার প্রথম দেখা ২০০৮-এ । নিজের লেখার মতোই সে অকপট, মুখোশহীন, মানবিক।
একটু কথা বলেই তাকে ভালো লেগে যায়। যেমন একদিন ভালো লেগেছিল তার কবিতা ।
লেখে কি এখন ? নিশ্চয়ই লেখে।
এই বইটিতে ১৯৯৪ অব্দি লেখা আছে তার। সে ও তার ছাতিমতলার বন্ধুরা বাংলা কবিতায় এক অন্য ভাষ্য তৈরি করেছে। প্রন্তিক মানুষের কবিতাভাষ্য । রামাশিস যদি না লেখে সেই মানুষগুলির কথা আর কে লিখবে? সেই মাটির কথা আর কে পরম মমত্বে তুলে ধরবে আমাদের সামনে।
আমি অপেক্ষায় রামাশিসের আরও আরও কবিতা পড়ার, এই সময়ের আরও আরও রামাশিসের কবিতা পড়ার।
বন্ধু ।

(ছবিঃ ভাসিলি ক্যান্ডিনস্কি) 

হিমেল মাসের কবিতা ১০

Image result for abstract painting peru

হারানো পাতা 
             -অনুভব দে

নিজস্ব ফুটেজ সাদা স্ক্রীনে বাসা বাঁধে
কাশবনের বিস্তার শীতের রোদ মেখে হলদেটে

নদীজুড়ে সীবিচ সীবিচ বালি
পিকনিকের হাঁড়ি দুলে যায় উত্তরে হাওয়ায়
কালো দেহে লেপ্টে থাকে সাদা বালির কম্বল

ব্যাগভর্তি জমাট কান্না জড়িয়ে থাকে
ফুটবল শৈশব

(ছবিঃ রবের্তো মাত্তা) 

হিমেল মাসের কবিতা ৯

Related image


প্রতিবেশী
      -অভ্রদীপ গোস্বামী

উনাকেই অভিশাপ দেব বলে তোমায় ডেকেছি
বসো। পূর্বপুরুষ থেকে উত্তরাধিকার পর্যন্ত সমস্ত
তথ্যগুলি ফাঁস করে দেব বলে তোমায় ডেকেছি
অথচ কি অদ্ভুতভাবে ওই লোকটাই চিবিয়ে খেল
এতোদিন আমার মগজ। এতদিন ওই লোকটাই
শেখাল চলাফেরা নাচ ও গানের কৌশল।

তারপর একদিন সমস্ত বশ্যতা ছাড়িয়ে ভেগে গেল
গালি দাও ওর নামে লেখো ওটা স্বার্থপর লোক
এখন শিরস্ত্রাণে আলো আর হৃদয়ে নিরক্ষর বর্ণমালা
আগুনের কাছাকাছি লোকটার কাছাকাছি এসে
এখন পিতার শবদেহে মুখাগ্নি করবো বলে বসিলাম
পুত্রের ভঙ্গিতে। তর্পণের তিল ও তুলসী গুলি
আগুনের একপাশে শুয়ে আছে পুরনো বান্ধবীর চুলে...




(ছবিঃ ম্যাক্সিমো লরা) 

হিমেল মাসের কবিতা ৮

FineArtSeen - Aus naechster Naehe (at close range) by Ute Laum. This original abstract painting is full of colour and comes from the collection on FineArtSeen. Click to view more art at great prices from the Home Of Original Art. << Pin For Later >>

ঘনত্ব
       -দেবাশিস কোনার

আকাশ কাঁপিয়ে তিরের মত এসে বক্ষ ভেদ
বমি পায় বরফের শিরা - উপশিরা বেয়ে আসা লাথি
ঘনত্ব মাপার আগে মেপে নাও জঙ্গি উপকূল
তেরছা চোখ খলনায়কের তুঘলকি আয়োজন

নামকরণের আদি , মধ্য এবং অন্তিম ইতিহাস জেনে
কি লাভ ? শুধু একটা উচ্চারণ - তার এতো বৈভব !
জীবন বাজী পোরানোর আচ্ছাদন । কল্কি অবতার ।
দুঃশাসন প্রচারক মাইলেজ পাচ্ছে বড় বেশি

কি হবে বেলি ফুল শুকে যদি না উষ্মা ফলকে গান বাজে ?

আসছে দরিদ্র দিন পিঠে।হা-অর্থ -- তুমি কি শীতলপাটি?
ঘনত্ব মাপার আগে আমাদের হিসাবগুলি দেখ ! আমরা,
নিজের মতো করে আকাশে সাঁতার কেটেছি । আমাদের
ঘরবাড়ি আলো; কেন যে হটাত মাটি চাপা পড়ে গেল ,--

দেখবে না এসে , এই মাটিকে ভালবেসে ? অত্যাচার আর
অবহেলার এ এক চিরন্তন ছায়া । কত কাল বল কতদিন
এভাবে রক্তিম হবে মাটি ? এসো বর্শাফলকে লিখি দাগ !
ঘনত্ব বজায় রেখে পার হই সহস্র অনুপাত .


(ছবিঃ উতে লাউম) 

হিমেল মাসের কবিতা ৭

Image result for gaganendranath tagore painting stair



গতিসূত্র
          -তন্ময় ধর

সেই জলসূত্রের কোন নাম ছিল না। শব্দরূপ মুখস্থ করতে করতে পোড়া কাগজের গন্ধ বদলে গেল তোমার স্পর্শে। সেই স্পর্শ থেকে জিভে, অন্ত্রে, রঙে, মহাজগতের প্রসারণে ছড়াতে লাগল আলো। তোমার অভিনীত প্রতিটি যুদ্ধে আমার গতি বাড়তে লাগল।


আমার দীঘল ঘরের দরজায় একদিন জাতিস্মর হয়ে উঠল রক্তপাত। আমি বীজধান গুছোতে গুছোতে তীব্র গান বাঁধলাম। সে গানের খাতা নষ্ট করে তাতে মিঠা জলের মাছের রেসিপি লিখে রাখলে তুমি। সেখানে নুনের পরিমাণ আন্দাজ মতোই।

জালকাঠির পাশ দিয়ে আমার গলার লালচে শব্দ উঠে আসছে। আর পাতালের অন্ধকার ডাঙায় পড়ে থাকা একটি মাছ ছটফট করছে একটু বাতাসের জন্য। সে বাতাসের সমীকরণে জল ঢেলে দিলে তুমি।  

(ছবিঃ গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর)

হিমেল মাসের কবিতা ৬

Related image




ব্রেক-আপ 
       -শিবু মণ্ডল 

তাই লুব্ধক ছুটে যায় তিতির তারানার দিকে
পাখিরা ছেয়ে আছে মাঠ
পুরবি মিশে যায় কুশন কুশন পায়ে।
কে যেন হেঁটে গেল রাত্রির দিকে।

ঝপাং ঝপাং ডানার ভাঁজে
আদুল আদুল বাতাস
মই নিয়ে পালাল সই কনেরঙা সাঁজে !

(ছবিঃ ফ্রাঞ্জ মার্ক)

হিমেল মাসের কবিতা ৫

Image result for van gogh painting


দূরবর্তী শব্দটায়
         -নীলাব্জ চক্রবর্তী



পোশাকী একটা নগ্নতায়
সাদা সাদা ভাবনার কালচে ভাবটুকু নিয়ে
আমি এই পাথুরে মুঠোর মধ্যে
পড়ে যাই
একটা ধারণার অস্পষ্ট ভেতরে
এই দ্রুত নভেম্বর জুড়ে
ক্যালেণ্ডার হয়েছে
জন্মদিন নামের ফল
দূরবর্তী শব্দটায়
খোদাই করা ভাঙা সিনট্যাক্স প্রসঙ্গে
বিকেল প্রসঙ্গে
কাঁচের গায়ে
জমে থাকতে থাকতে
সম্পর্কে আমি এক সর্বনাম দেখি
তোমার স্মৃতির ভেতর
এঁকেবেঁকে লাল মোনোরেল
ডিজাইন করা লিফটিং হুক
অন্য কারো ছায়া তুলে আনছে...

(ছবিঃ ভিনসেন্ট ভ্যান গগ)

হিমেল মাসের কবিতা ৪

Related image


বেমালুম
          -দেবারতি চক্রবর্তী

চিঠির শেষ শব্দটা ভুলে যেতে চাই
আব্দার রাখার মতো তোকে কোথায় পাবো
টেবিলের চায়ের কাপ ঠিকানা হারায়
সারা ঘর জুড়ে অনেক ছবি

কান্নার ছাপ বালিশের বিরক্তি
হাতপাখায় ধূলোর বংশ বিস্তার
আজকাল আর বা পাশের জানালাটায় ডাক পরে না

অপছন্দের বইগুলোই শেষ ঠাঁই
পছন্দেরা তো কবেই ছেড়ে গেছে

(ছবিঃ পাবলো পিকাসো )

হিমেল মাসের কবিতা ৩


Related image

জরুরি আদরের নাম
                  -সম্পিতা সাহা

১.
এদিকে এখন ঘরভরা মৃত্যু
অথচ কেউ খেয়াল করছে না
প্রত্যেকের কমবেশি খিদে পেয়েছে।
দীর্ঘদিন চিবিয়ে না খেলে
পরাসেধ দাঁতেও মেদ জমে,
আর আমরা আরও বেশি করে
পিপাসার খাবারে অভ্যস্ত হয়ে পড়ি...

২.
এই সম্পর্কে শিকড়ের ধর্ম
গ্রহণীয় হয়েছে রোজ।
তুমি মাটি, আমি শিফার মতো জীবন...
ইন্দ্রিয় ছাড়া শুনলে তোমার নিশ্বাস, শীত লাগে।
ফোটা শালুকের মতো ঠোঁটে কেবল
আত্মজীবনী লিখে যাও একটানা...

(ছবিঃ আর্শাইল গোর্কি )




হিমেল মাসের কবিতা ২


Related image


বিষাদ সুন্দরী 
       -  স্বাগতা সিংহরায়

সে এক উচ্ছিষ্ঠার কথা-
কানে তার বিষাদঝুমকা      ঠোঁটে আড়মোড়..
নগরভ্রমণে যে নাবিক পথিক হয়েছিলেন-
তার সন্দেহ       এ ঢেউ নাকি মহাপ্লাবন!
তুড়ির জোর বাড়লে পরে সব আঙুল-
একদিন হাত হওয়ার দাবি করে..
ক্রমশ হাত হয়ে যায় শূন্যখিলান
চোরাআলো উঁকি দিয়ে বলে-
"এই তো আমি!     সারাদিন কাছাকাছি"
খুঁজতে গিয়ে বেলা ঘনায়,নিকষ বন্দর
পাথরের উপর আলগা করে কে যেনো-
আদরের ঢেউ রেখে যায়..

ঈশ্বর একদিন গণিত খুঁজতে এসে দ্যাখে-
সব ঢেউ অ আ ক খ হয়ে গ্যাছে;
আর তার তলায় বিষাদসুন্দরী ফেলে গেছে
 শ্যাওলা সবুজ-নীলচে পোষাক...

(ছবিঃ সালভাদোর দালি )


হিমেল মাসের কবিতা ১


Image result for gaganendranath tagore painting stair

অমৃতকুম্ভ
       -সোনালী মিত্র 


লুকিয়ে চুরিয়ে কী এত দেখছেন !
যা দেখা যায় না দৃষ্টিতে বুঝি তার স্পর্শ চান ধ্যানের মহিমায়?
অহঙ্কারী যুবকবেলায় এসব মানায় না আপনাকে
বরং শিরদাঁড়া সোজা করে দেখুন,
ফড়িঙের ডানার রঙ-স্বচ্ছতা নিয়ে দেখুন
দুধ-সফেদ ফ্যানায় উত্তাল শরীরী ঢেউ
আমার উন্মুক্ত নাভিকোষে অসুরশ্রেষ্ঠ মধুকৈটভের জন্ম
দেখুন নির্মেদ যোনিকেশরে উষ্ণায়নের সৃষ্টি-স্থিতি-লয়
সেখানে বিশ্রামরত আদি -অন্ত ত্রিকালজ্ঞ প্রতিটি পুরুষ
দেখুন কৃষ্টসভ্যতার উৎকর্ষের আগুন
এসব যদি না দেখতে চান,তবে দেখবেন'টা কী ?
বৈষয়িক ঘানিকলে পৃষ্ঠ হাড়গোড়
অধিসৌরবছর ধ্বংসে আছেন দেবী,অধিসৌরবছর বুক পেতে কৃষিক্ষেতে
উৎপাদন শ্রেষ্ঠা নরমত্বকে মাভৈ: উপনিষদের গন্ধ
চার্বাকদর্শন পোষা আছে আমার বিপদজনক ভাঁজে ।
এখনো কি মানবেন না,বৈদ্যুতিক চুল্লিজাত চুম্বনে
ধ্বংসের আগে অমৃতকুম্ভ আমার জন্মগত অধিকার?

(ছবিঃ গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর )