Saturday 6 December 2014

কালপুরুষের মাসের কবিতা ৭


মায়ানাভি
     -তন্ময় ধর

কবিরাজি টকফলেও সেই মানে মানে
এঘরে জলের নখ
   উদ্ভিদের লাবণ্য এলার্ম

(হাসি)
ফর্সা বাড়িয়েছো তুমি;
রক্তের দশমিক বাড়ছে না

(...প্রস্থান)
একটু ব্যথা
বায়োকেমিস্ট্রির আয়না থেকে
হালকা হানিকম্বে সন্ধের মৃগশিরা ছলকে গেল

(পুনরাবির্ভাব)
কাঁচের ঊর্ধ্বসীমায় এই অভিনয়ফেরৎ পারফিউম
ব্লু


কালপুরুষের মাসের কবিতা ৬


সম্পাদ্য
   -কল্যাণী লাহিড়ী

বেছে বেছে সম্পাদ্য ধরি, যাতে অতিরিক্ত তেল থাকবে ভক্তিরসের, আর
মুর্গমসল্লায় পুর দিয়ে ভাতকলমে, নামজন্য কবিতা ছাপা হবে
নানাদূরে, দুচারটে শাবাশ লোটা চিঠির মহরৎ। খুব ধুম পরে
যাবে আগুন পোহাবার। লগ্নিপুঁজি থাকবে হাতের। শতকরা হারে
কতটা ছাড়যোগ্য সম্পাদ্য ধরবে? হাতের জেসমিনরা বাহবার
আকাশ ধরবে, ওদিকে ফাগুয়া নৌকা ভাসাবে জলে। শরণের
বল কাজ করবে কণার মাধ্যমে।

কালপুরুষের মাসের কবিতা ৫


জাহাঙ্গিরকে লেখা কবিতা-২৮
              -অস্তনির্জন

হাওয়ায় কিছু পাতা বেড়েছে- কিছুটা কুয়াশা
  এই এক পাতলা তহবন্দ পরা ভাব
              শখসন্ধের বিকেলে
 আনাজপাতির থেকে বেরিয়ে আসা আকর
এই এক কুয়োতলা লোকাস ও তারওপর কেউ
  
            নব ঘোরালো

জাহাঙ্গির তুমি তো জান নব ঘোরালে আঙুল কিছুটা শূন্যে ঘুরে যায়
                           ঘাম পড়ে
তোমার শরীরকে সে আলপাট করে ফসল ফলায়
আপখোরাকি দেয়, খুলানাবান ফর্সা করে দেয়

তাই রুমাল আজও লবণাম্বু উদ্ভিদ
তাই মুখ মুছিয়ে দেওয়ার নুনটুকু এই দুপুরে এপ্রিলে পানপাতায়

নিবিড় গ্রীলের ভেতর সহজ সত্যনারায়ণ- ত্রিশটি পান শশাকুচি
মোদক ও তুলসী, এতৎসহ পঞ্চগব্য পঞ্চঘৃত পঞ্চোদক পঞ্চামৃত
বারকোষ ঘুরে উপচে পড়া পিঁপড়েগুলি- আরো এই কিছু ফল

কালপুরুষের মাসের কবিতা ৪


বেকার ও বেকারার
          -ঋপণ আর্য

বনের আঁচড়ে যাই প্রতিদিন।
পাথরের উপর বসে
কালা হতে পারি না বলেই হয়তো
        পাথর হতে পারি না,
      কালো হই খানিক।

উঁকির ইচ্ছের অনতিক্রম্য
শ্যাওলার কাছাকাছি এলেই
দূরত্বের গন্ধ শুঁকে চলতে থাকা
    ছড়িয়ে যায়।
ডিও, ধুপকাঠি, বেলফুল এঁকেবেকে
সাদাকালো রিড।
হারমোনিয়ামে তোমার হাত আছে।
আমার কোনো হাত নেই চাকরি পাইয়ে
দেবার!

পাগুলোয় সেই থেকে দাঁড়িয়ে আছে
      অতিথি নিবাস।

Saturday 29 November 2014

কালপুরুষের মাসের কবিতা ৩


অথচ
                   -অভ্রদীপ গোস্বামী


রূপ চলে গেছে গঠন তবুও সনাতন
পাপ ক্ষয়ে গেলেও অবিকল রয় গঠন

তুমি তো তরল স্বেদ অনাদায়ী দেনা
বহতা কংসাবতী জল কমছে না

অন্য কোন বন্ধ দরজার এক কোণে
রক্ষক তক্ষকের পৃথক জাল বোনে

বলা নেই কওয়া নেই তুমি তো দাঁড়ালে
রূপ হয়ে সনাতনি দুহাত বাড়ালে

সহজেই ধরা দেন যে সব জাতক
আমার কবিতার খুনি গুপ্তঘাতক
অলৌকিক

তারপর কাপ থেকে চা পড়ল মাটিতে
রক্ত হয়ে গড়গড়িয়ে চলে গেল

মেঝের ওপর ছাতু ওঠার মতো গজিয়ে
উঠছে ছোট বড় মাঝারি শিবের ঢেউ

পোয়াতী বৌ বৌদ্ধ গান গাইছে দশমাস
দশমিকের মতো ছোট হয়ে গেল ঝুড়ি

ময়লাফেলা মাসি দাঁতের মাড়িতে হাসি
ঝড়ের পথে এসে মিলিয়ে গেল

চায়ের কাপ থেকে চা পড়ছে মাটিতে
তোমরা দ্রৌপদী দেখলে দু:শাসন 
                                      দেখলে না

কালপুরুষের মাসের কবিতা ২


দীর্ঘ তু দীর্ঘ মি
-তন্ময় রায়

কপাল করে চুরি হই
ভিনমলাটে টাঙানো থাকার অপূর্বে
সবকিছু ছেড়ে শ্রাবণে আসি
সবই তো ছেড়ে রাখা
পুকুরপাড়ের গাছটাও
            তোমার ভাবে হয়ে আছে
জলবহরে বাড়তি নেশার ভালো রং
স্বপ্ন পেতে ধরি
দুহাত ভরা হাসিমুখ চাঁদ দিয়ে বাঁধানো হচ্ছে

কালপুরুষের মাসের কবিতা ১


বাজি 
                  -সঙ্ঘমিত্রা হালদার


দূর থেকে ভেসে আসা গানে হৃদয় বধ্যভূমি
এ তোলে ওর মুখ
সারাদিন বাঁধা গরু সে হৃদয়ে ঘাস খায়
শব্দে ফেনা তোলে

দূর থেকে ভেসে আসা গানে ও কার মুখ
পা টলে যায় আর দরোজা লক কর ভেতর থেকে 
যে আমি এখানে
যে আমি ওখানে
যে আমি ওধারে
যে আমি এধারে
কারা শনাক্ত করো কে, কাকে
হৃদয়ে পৌষমাস, হৃদয় খড়কুটো
কারা জ্বালো আতসে সে বাজি 

Tuesday 21 October 2014

আকাশপ্রদীপের মাসের কবিতা ৬

সার্চ ইঞ্জিন
-শৌভিক দে সরকার

অন্তর্নিহিত মাথা আর তার পাশে
আমি একটি শহরের চিহ্ন আঁকলাম

ঘ্রাণের সমারোহ, ব্যস্ত রাস্তার দশদিক
পুনর্বাসনের অধোগামী চিল
ঘৃণা ও মারীর অন্যপ্রান্তে প্রেরিত চৌকাঠ
শুধু পতন রহিত একটি বাড়ি, সন্দেহছায়া

আমি ঐ বাড়িটির ছায়ার ভেতর
আবার একটি ভুল নির্দেশিকা আঁকলাম

আকাশপ্রদীপের মাসের কবিতা ৫

যা গড়িয়ে আসছে 
 -নীলাব্জ চক্রবর্তী



যা গড়িয়ে আসছে
তার নাম মরসুম রাখি আর দেখি
গোলাপি রেইনকোট জুড়ে
বড়ো হচ্ছে ওই দেওয়াল
তবু
মিছিল নিয়ে
কোনও কবিতাই লিখতে পারিনি
ফোঁটাগুলো ব্লাশ করছে দেখে
কবিতার শরীরের দিকে দ্বিধাহীন
ভাঙা অক্ষরগুলো ফের
জুড়ে যায় আর
একটা বৃত্তের কথা চলে আসে
রোদের আবছা ভেঙে
ছড়িয়ে
খুব পড়লো
সাদাকালো ঘুমের একটা দীর্ঘতর স্যুটকেস

Monday 20 October 2014

আকাশপ্রদীপের মাসের কবিতা ৪

ক্রমাগত 
- বেবী সাউ

এই সন্ধ্যায় হাতজোড় করে কী চাও 
সমস্ত চাওয়া জুড়ে এত কোলাহল 
এত ক্ষুধামেশা চোখ 
                   জেনেও 
অদেখা পাথরে হাত পেতে থাকা মানায় না তোমায়

সন্ধ্যা আলোয় পুড়ে যাচ্ছে জমানো শ্লোক 
এতদিনের ক্ষুধার ক্ষেত্র 
নির্জন বীজ 

নোনা জল নামছে স্তন বেয়ে 
শ্বেত কনিকায় ধূসর গোধূলি 
মায়াকাজলের লোভ 

শেষ মৃত্যুর আগে ঠিক কতগুলো 
মৃত্যু উপত্যকা পেরোতে হয় 
          হবে , প্রিয়

আকাশপ্রদীপের মাসের কবিতা ৩


কি দ্বিধা রেখে গেলে...
- নীলাদ্রি বাগচী

খাতার পাতায় তাই লেগে আছে নীরব হাতের
ঘুমের ওষুধ থেকে ঝাড়া শযাদৃশ্য ফের
ডাক দিলো ধুলোর সদরে
বেহায়া সাইকেল ফিরল
ফুরনো বিকেল
শান দিলো ইঁদুরের নম্র গর্তে, সঞ্চয় দিনে

একটি নৌকার গুণে অচিহ্নিত মার্কা হয়ে গিয়ে
চোরা শহরের থেকে জল ঝরল
ভুটান পাহাড়ে গেল
পূরবী ভেজানো সন্ধ্যে
গাড়ি গাড়ি পোলট্রির স্বাদ

লাগে না লেখার মর্জি  রোলকল ছুঁয়ে আসে
মাঝেমধ্যে
মাঝেমধ্যে অতিরিক্তে এরকম ফেরতাই ধুন
হাতের পাতায় লাগা
খাতার পাতার অকারণ......

Sunday 19 October 2014

আকাশপ্রদীপের মাসের কবিতা ২


প্রস্তাব
-অতনু বন্দ্যোপাধ্যায় 


মুখোশ পারছে এখন ভেঙে পড়া রাত্তির  

সর্বনাশের 
কিছু উত্তর ছিল বলেই  করে ফেলা ভুল 
                         লম্বা আয়নার সাথে 

আর চিবুকের সমান্তরাল 
চাইছে প্রস্তাবের অপেক্ষা
বাড়িটার জ্যোৎস্না বাজারে 

সামান্য সূর্য ফিরে এলো আবার  
ফিরে এলো শহরে তখন
                  
                  আঙুলের তৃতীয় উৎসব এ

আকাশপ্রদীপের মাসের কবিতা ১

ফেনা
-হাসান রোবায়েত

১.

ঘ্রাণ কি জবার আয়ু 
তবে কেন প্রথম ধাতুর কাছে 
দাউদ দাউদ বলে হাহাকার 

সাধু মীন, এখনো নিয়ম করে 
ভেসে ওঠে রোববার 
বোতামভীতির কাছে রেলবন 
দূরে ডিগ্রি ডিগ্রি ব্রিজ 
ইকুয়াল  হাওয়া 

২.

গাছ ও পথের মাঝে কোনো শূন্যের খেলা নেই
যে-টুকু ফাঁকা 
সবখানি চিনে নেয় পা
কেউ কেউ দাঁড়ালেই 
কোমরে টান মারে সাবানের ফেনা
ফুলে ওঠা প্রচ্ছদ রপ্ত করে হাওয়া