Saturday, 31 August 2013

নভস্য শেষের কবিতা ৫



মেঘ
-ইন্দ্রনীল ঘোষ


মেঘে মেঘে এত খোলামেলা নার্স
       আজ সারাদিন, হাসপাতালের গন্ধ আকাশে...

মেঘের ওদিকে আমার বাড়ি
আমি কিছুতেই বাড়ি ফিরতে পারছি না।
মেঘের ওদিকে সব নাম
একটা নামও মনে করতে পারছি না।

শুধু নার্স
       তাদের সাদা পোষাক উড়িয়ে দেওয়া
                     সমস্ত গাছে, পাখিদের স্তব হবে বলে

ফাঁকা স্তবে, আমি বসে আছি
হাসপাতাল থেকে মেঘ আসছে নিয়মিত


নভস্য শেষের কবিতা ৪



নৃ ছবি
-রাজেশ শর্মা


তারপর সে আসলে জলীয় আহামরি 
সাজাচ্ছে সান্ধ্য উড়ালপুল   

ডুবে যাই সেইখানে
ভেসে ফেলা একটা হুজুগ 

একা বেফিকর সময় সরাইখানায় খুব যন্ত্র যন্ত্র বলছে 


নিদারুন জেল্লা ভেঙে যাচ্ছে
ভেঙে যাচ্ছে রহিত সীমানা

তুমি আত্মজ আঙুলে লাগিয়ে দিচ্ছ
স্নানের শর্করা

দিক ভুলে যাচ্ছি


নভস্য শেষের কবিতা ৩



মিতাসু-
-পার্থসারথি

তাহা তাহারা আহারকে নামিয়েছে
সুমি দোতলায়, ডানারা আর হাম্পিতে নেই জেনে
আঠাশটা বাসি গোলাপকে মদে ভিজিয়ে নিচ্ছি
                          সম্পর্কের বাঁদিকে বসাবো

বলারা আর রুমালে নেই
নেইরাও আর কিছু বলাতে নেই

একটু থামলেই হা-হা-দের নাবিকতা
জাহাজে উঠে এই প্রথম অঙ্গাঙ্গি ফিল করলাম
যেখানে গন্তব্য জানে শুধু মেলবিহীন দুটো জিভ
  

নভস্য শেষের কবিতা ২



আয়নামহলের টেক্সটগুচ্ছ
-সোমতীর্থ নন্দী




একটি পাখির মত মণিহার ঝুলিয়ে রেখেছি বুকে
আর কোনো নৈঃশব্দ আমার কপাটে আসেনা তাই
এমন ডানায় বেঁধেছো
নয়খানি দ্বার যেন তোমার গুঁড়োর মত লেগে আছে
প্রতিটি মালায়





বিছড়ি যায় মোসে মেরা শাম
যেন ঘাম ফুটে ওঠে আয়নার ভাঁজে,
সেজেছে আমার ছয়, তোমায় দেখাবে বলে
কত ভালোবাসা, শরীর কেচে নিই আমি
তোমার সাত ঝর্ণার জলে
পড়ে থাকে মলিন কাপড়,
নির্ভয় ফুলের অতলে

নভস্য শেষের কবিতা ১



শেষবার রঞ্জনাকে
-সুকান্ত দাস


বিহঙ্গম ময়ূর পাখাতে অলৌকিকতা অলক-তরীতে বিদায়ী নহবতখানার বিবাহমঙ্গল রাতের ওপারে লুকিয়ে ছিল একালের গোঁজারা আলেয়ার তীব্র পরকীয়া বুঝি রং লেগে সঙ্গোপন হারায় তুই হারাস এক আকাশ জোনাক শতক বাইরে রূপকথার উড়াল আনন্দসরণি বেয়ে শোকের শহর একান্তে জেগে থাকা আবির্ভাব নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন, নীচ বিরোধিতা, উৎস খুঁজে নিতেই সারিবদ্ধ চিতাকাঠ শুয়ে পড়ি অদৃশ্য হাতেরা হাড়ের ওপর পাহাড় চাপা দেয় চাপা পড়তে থাকে তুই, তোর শরীর, তোর ওম

Saturday, 17 August 2013

নভস্যের কবিতা ৭



চিহ্নকের অদৃশ্য ছুরি
-      রুণা বন্দ্যোপাধ্যায়


খুব গাঢ় হয়ে উঠছিল বৃষ্টির ছায়া

স্নায়ুকোষে খুব সতর্ক একটা সাপ
দুলছে
এপাশ
ওপাশ

বিষণ্ণ তার নাম খুঁজছিল

জলকণারা ঝাঁপ দেবার আগেই আঙুল তার পলায়নবাদী চিহ্নের ভেতর

যা নেই তাই চিহ্নক

আমি অর্থের কথা ভাবিনি তেমন
হারিয়ে যাওয়ার কথা
ভেজা রাস্তার কথা
এসব অপরিহার্য নয়

আমি তো দেখেছি অচেনা পায়ের শব্দে কীভাবে তুমি নামিয়ে রাখো অসুস্থতা

বিস্ময় তার নাম খুঁজছিল

নিবিড় যত্নের পাশে
হলুদ জখম                                                                                         
ছায়ারা যখন গুটিয়ে আসছে
চিহ্নিত বস্তুর ভেতর
স্মৃতিসমারোহের ভেতর

আমার সলিটারি পায়ের মতি ও গতি নিয়ে আমি খুব বিব্রত হয়ে উঠি

প্রতিরাতে পালানো অনুষঙ্গ
নিহিত আশার ম্যাজিক থেকে
অনিবার্য ঈশ্বর থেকে


নভস্যের কবিতা ৬




ইনসমনিয়্যাক
-সাঁঝবাতি

আমার নাকছাবিতে
একটা আয়না লাগানো আছে।

একটা গন্ধ মনে পড়ে।

তোমার নতুন কেনা কালো অন্তর্বাসে,
মায়ের গুঁড়োর মত মেঘ...

ঝিম ধরা মেনে আসে, স্নেহের অভ্যেস...

নভস্যের কবিতা ৫



বিজ্ঞাপনবিরতি
- নীলাব্জ চক্রবর্তী



একজন
জুতোর ভেতর দিয়ে
খুলে ফেলছে
লিফটের দুপুর
আর দেখছে
কীভাবে
পাথর হয়ে যায়
ভেজা ক্রিয়াপদগুলোর জন্য অপেক্ষা

বিজ্ঞাপনবিরতির দীর্ঘ সূচক
              এগিয়ে আসছে
পেরিয়ে যাচ্ছে
চোখবাঁধা করিডোরের ঠাণ্ডা চাবি
ওখানে পাশের ঘর নেই
নরম আলোর ভেতর
ঝোলানো নেই
জন্মদিনের আঁকাবাঁকা হরফ... 

নভস্যের কবিতা ৪





জাতিস্মর
                                                 - সৈকত ঘোষ 
                ( ১ )
একটা লুপ মাঝপথে ক্লোজ করলে বিশেষজ্ঞের মতে 
ভূমিকম্পের প্রবণতা দশ গুণ বাড়ে

বাবা ও নেড়ি এক জাত হতে পারে 
তেলের দাম লিটার প্রতি পাঁচ টাকা বাড়লে 

          রুপিয়া লো রুপিয়া 
                   হিং - ক্রিং 
                         আয়াশী

তেল চিটচিটে ঘাসে অর্ধেক লাল অর্ধেক সবুজ 
কে যেন বলেছেন সরকার জাতিস্মর হলে 
বি .পি .এল , এ. পি .এল  দুঃস্থ- লুলা 
  
       সবাই ঘুমিয়ে থাকবে 
                 উল্কিতে আকা হাজারটা শিলালিপি 
                  কারো ঘাড় বাঁকা
                  কারো চোখ বোজা

বর্ণপরিচয় উল্টে গেলে 
     আমি ক্ষেপণাস্ত্র দিলাম 

সময়ের হাতে দেশলাই 
সময় অন the টপ 

                 ( 2 )

ফুটেজ বলছে মানুষ ও ঈশ্বর সিমবায়োটিক জীব 
রাবণ যুগে কবিতা অনেকটা লোকাল ট্রেনে 
লেডিস কম্পার্টমেন্ট এর মত যতই স্কিপ করো
ছিপি খুলতে একটা ওপেনের লাগবেই ...

          শরীরের অবভাস বদলে গেলে টাটার প্রতিবিম্ব মিস্ত্রী
লিঙ্গবৈষম্য  রুখতে তুমি হয়ে যাও মৎস্যকন্যা |
ব্রিজ-কোর্স পাস করলে বুদ্ধির হাইব্রিডাইজেশান 
                      
                    ডাবল শেড

একপাশে  X অন্যপাশে হরিনাম |

সুইসাইড নোট বলে : 
             শরীরে  ব্লেড চালালে 
             ওটাই গ্যাংনাম স্টাইল 

                        তুফানি চুমুকে 
                         S ও আর.এস 




নভস্যের কবিতা ৩



মলয়চন্দন
                 -তুহিন দাস

মলয়চন্দন তোমাকে ডেকে যাই এইসব দিনগুলোর পাশে
দরজা খুলে যায় হাওয়ায়। ফুল আর ভালোবাসা নিয়ে
কথা হয়। আমরা দিন, আমরাই রাত; দিন ও রাতগুলোয়
পড়ে জলের ছায়া।

আমি দূর কোনো অপরিচিতাকে খুঁজছিলাম আর আয়নার ভেতরে
নতুন কোনো পথ পেয়ে যাচ্ছি; আমি পড়ে ফেলছি মৃত পাতা;
গানের ভাষার মধ্য দিয়ে সে পথ চলে গেছে, পথের পাশে
পড়ে জিপসীদের তাঁবু। মলয়চন্দন তোমাকে ডেকে যাই,
এইসব দিনগুলোর পাশে দরজা খুলে যায় হাওয়ায়।






নভস্যের কবিতা ২




খুনখারাপি
-অনুপম মুখোপাধ্যায়


ফাঁসি দেওয়া হুলো বিড়াল
দুলে যাচ্ছে
দুলে যাচ্ছে

দু

আমাদের খামখেয়ালি রোদে
হলদেটে থালায়
আরশোলার ফসিলগুলো

যেমন

তেমন নয়

নণীবালা আর সাহেবের নিখুঁত মামলাগুলো

মরা ইঁদুরে ধাক্কা দিচ্ছে
আনন্দবাজার




একটা উঁচু বাড়ির সামনে
একটা অভাবনীয় উঁচু বাড়ির সামনে

লোকটা

বালতিতে
একটু হেলে
গাড়ি ধোয়ার জল বয়ে আনছে

আরেকটা গাড়ি

ওর পিছনে

একটু হেলে

ফুটপাতে উঠে আসতে চাইছে