প্রিয় জিম করবেট......
- নীলাদ্রি বাগচী
১।।সেবার বসন্তে তুমি ফিরে
এসেছিলে
তখন পাতায় পুল, দড়িতে শুকিয়ে যাচ্ছে
রোদ
মন্দাকিনী শীর্ণা তার পাথুরে ফেনায়
কুয়াশা মলিন এক হত্যাদৃশ্য
মড়া গরু আঁকড়ে দাঁড়িয়ে আছে পাহাড়ি
মানুষ
তার পাথরের বাড়ি- খোলা উঠানের ছেঁড়া
দড়ি- ঘরে জানালা নেই
বাতাসের জন্য শুধু দরজা
শুধু শুকনো পাতায় রাতভর থাবার আওয়াজ
অলকানন্দা কাছে গঙ্গার জন্মে মিশে
আছে আর
তুমি ফিরে এসেছিলে
সহ্যশক্তি
খড়ের গাদায় ঝোঁকা ময়না গাছের আশ্বাসে......
২।। আজ সারাদিন আমি কমললতার
পাগলামি দেখেছি। সেটা বড় কথা নয়। আসলে দরজার সামনে যেই মোবাইল বন্ধ হয়ে গেল ওমনি
বাইরে ডাস্টবিন ওলটানোর শব্দ।। ডাস্টবিন ছড়িয়ে পড়ার আওয়াজ শুনতেই বন্দুক হাতে সোজা
বাইরে। আর বন্দুক যখন রয়েছে তখন চিতাবাঘ থাকবে না এ কোনও কথা? তাই সামনে গজিয়ে
উঠলো পাহাড়ি জঙ্গল, ঝরঝর ঝোরা আর লাফিয়ে বার হল চিতাবাঘ। হৈহৈরৈরৈ একেবারে। কিন্তু
চিতাবাঘ আছে আর মড়ি নেই? তাই জঙ্গলের ধারে ঝোপে একটা আধখাওয়া মৃতা। আর মৃতার বাড়ি
বনবস্তি, পাহাড়ি এলাকা। ডুবুডুবু নতুন চাঁদ। ছাগলের ঘরের পাশে ধাপ জমি। নরখাদকের
পায়ের ছাপ। ছড়ান ছিটানো আবর্জনা। ওলটানো আবর্জনার গামলা। বন্দুক হাতে অন্যমনস্ক
একজন চিতার বিষয়ে শুনছে। এক পা পাথরে তুলে। ধোঁয়া ছাড়ছে হাল্কা। তার মোবাইলে
ব্যাটারি নিয়মমতো ফুরিয়েছে।
আর সামনেই বনতুলসি, সরলবর্গীয়র ফাঁকে
ফাঁকে হলুদ কালো ডোরাকাটা চন্দ্রবোড়া ফুল তুলছে। পদাবলী গাইতে গাইতে। আর একটু
ক্ষণ। এরপরেই অলকানন্দা মন্দাকিনী মন্দাকিনী অলকানন্দা একাকারে ফুসে উঠবে।
উত্তরাখণ্ড যাবে মধুমেহ, প্রদাহে,
প্রবাহে ......
৩।। ওক পাইনের নীচে ঘাস জমি আর
নীচে ঝোপ- জঙ্গল
তারও নীচে ভারতবর্ষ
এই রৌদ্রস্নাত চিত্রনাট্যে এক শতকের স্থির
ছবি
খাড়াই ঢালের ঘেসোজমি
ভাঙা কাস্তে, তীব্র ইচ্ছে, লাঙলে ফলানো শীত
লাফ দিচ্ছে অনির্দিষ্টে লাফ দিচ্ছে
শূন্যতার ঘ্রাণে
পাহাড়ি রমণী জাগছে
লন্ঠন ও জোনাকি আবহ
তুমি জেগে আছ রাত্রি, সারারাত কাঠ
পিঁপড়ের বিষ
রাইফেলে নিশ্চুপ