Thursday, 12 July 2018

শাওনরঙা অনুবাদ কবিতাঃ তিউনিসিয়া থেকে ইনেস আবাসি

Image result for Ines Abassi




কাদামাটির গান
                         -ইনেস আবাসি 
 
আয়নার ভেতর আমার প্রতিবিম্বে রাত্রি খুলে যায়
যখন আমি অক্ষরের মৃতদেহ জড়ো করি
যা অতিভাষণে মৃত
আমি বেছে নিই মাত্র কয়েকটা শব্দ
আর ধুয়ে নিই নতুন বর্ণালীতে
এবং ভারী শ্বাসের আশায়
যতক্ষণ না আমার সামনে ভাষার দরজা খুলে যায়

এবং আমি দেখি
গর্বিত স্বরে অ
উৎসর্গের গ্যাজেল নাচ
ভালোবাসার নামে
অবাক ক্রিমসন মুখ থেকে
চতুর্দশ অক্ষর কেঁদে ওঠে
এরপর স্বরে আবার,
এবার পুরো ছড়িয়ে থাকে।
তাই, আনা আমার নাম বায়ুতে আঁকা হয়
চারপাশে শব্দের ঢেউ চলে।

আনা, আমি:
অতিভোজে জর্জরিত রাস্তা আমার পদচিহ্ন গিলে ফেলে
ডিসেম্বরের বাতাস খেলা করে মুখে আর প্রশাখায়
বৃষ্টি ধুয়ে দেয় লালমাটির ঘর।
আর এটাই আমার শিশুসুলভ ভাষা থেকে
আকাশে জুড়ে দেয় একটা নীল মই।

আনা, আমি:
ঘামে ভেজা এক ক্ষুধার্ত রুটির টুকরো
প্রেমিকের রাত্রি এপাশ-ওপাশ করছে
বিস্ময়ের একটি বিছানায়
দুঃখ ফিরছে,
ফেব্রুয়ারী রাতে একটি বিড়ালের ডাকের মতো,
গানের ভিড় থেকে হারিয়ে যাওয়া একটি ব্যালাড
আহত স্ট্রিং থেকে আরবী সঙ্গীত
এবং আফ্রিকার বনের মধ্যে প্রাচীন ড্রামের ধ্বনি

আনা, আমি:
একটি বর্শার শব্দ
বাতাসকে চিরে ফেলে
তার শিকারের দিকে উড়ে যায়,
এবং শিকারের চোখে মোচড় দেয়
মৃত্যুর মুখ

আমি
এক ধূসর রঙের অশ্বিনী
নীচে নেমে আসি নদীর কাছাকাছি
বাতাস ও বৃক্ষের দিকচিহ্ন ছাড়াই
এবং আমি
প্রেমিকের ঈর্ষা,
উপপত্নী,
স্ত্রী।

আমি
একটি অন্ধকার রাস্তায় চুরি হয়ে গিয়েছি :
রঙ, সূর্য, ছায়ার প্রতিবন্ধকতায়
এবং অদৃষ্টে



আমি
সূর্যের জন্য ক্ষুধার্ত একটি শস্য ক্ষেত্র,
এবং একটি জলপাই গাছের কান্না
একশো বছরের পুরনো
একটি অন্ধ কুঠার দ্বারা কাটা,
এবং আগুনের ফিসফাস
শেষ নেটিভ আমেরিকান যে পুড়িয়ে ফেলছে জমি
শুকিয়ে ফেলছে নদী

আমি প্রথমবারের জন্য বললাম, "বাবা"

এবং আমি
আমি কাদামাটির কন্যা এবং তার মা।
কিন্তু যখনই আমি সেখানে দাঁড়াই, আপনার হাতে,
আমি আপনার সন্তানের চেয়ে বেশী আর কিছুই নই ।
আপনি,
আমার বাবা





(মূল আরবী থেকে করিম-জেমস-আবু-জেইদ কৃত ইংরেজি অনুবাদের মধ্যস্থতায় )

ইনেস আবাসির জন্ম ১৯৮২ সালে, তিউনিসিয়ায়। পেশায় সাংবাদিক। দেশে প্রচলিত আরবী ভাষাতেই তিনি কবিতা লেখেন। এযাবৎ তিনটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে তাঁর- 'বাতাসের গুপ্তকথা' (২০০৪), 'অন্ধের মহাফেজখানা'(২০০৭)'কোরিয়ার হাজার রাতের কাহিনী'(২০১০)। 

No comments:

Post a Comment