Thursday, 12 July 2018

উষ্ণিকঃ শাওনরঙা সংখ্যা

Image result for milky way galaxy painting

"প্রত্যাসন্নে নভসি দয়িতা জীবিতাবলম্বনার্থী
জীমূতেন স্বকুশলময়ীং হারয়িষ্যন প্রবৃত্তিম"

 উষ্ণিক

শাওনরঙা সংখ্যা

শাওনরঙা অনুবাদ কবিতাঃ তিউনিসিয়া থেকে ইনেস আবাসি

Image result for Ines Abassi




কাদামাটির গান
                         -ইনেস আবাসি 
 
আয়নার ভেতর আমার প্রতিবিম্বে রাত্রি খুলে যায়
যখন আমি অক্ষরের মৃতদেহ জড়ো করি
যা অতিভাষণে মৃত
আমি বেছে নিই মাত্র কয়েকটা শব্দ
আর ধুয়ে নিই নতুন বর্ণালীতে
এবং ভারী শ্বাসের আশায়
যতক্ষণ না আমার সামনে ভাষার দরজা খুলে যায়

এবং আমি দেখি
গর্বিত স্বরে অ
উৎসর্গের গ্যাজেল নাচ
ভালোবাসার নামে
অবাক ক্রিমসন মুখ থেকে
চতুর্দশ অক্ষর কেঁদে ওঠে
এরপর স্বরে আবার,
এবার পুরো ছড়িয়ে থাকে।
তাই, আনা আমার নাম বায়ুতে আঁকা হয়
চারপাশে শব্দের ঢেউ চলে।

আনা, আমি:
অতিভোজে জর্জরিত রাস্তা আমার পদচিহ্ন গিলে ফেলে
ডিসেম্বরের বাতাস খেলা করে মুখে আর প্রশাখায়
বৃষ্টি ধুয়ে দেয় লালমাটির ঘর।
আর এটাই আমার শিশুসুলভ ভাষা থেকে
আকাশে জুড়ে দেয় একটা নীল মই।

আনা, আমি:
ঘামে ভেজা এক ক্ষুধার্ত রুটির টুকরো
প্রেমিকের রাত্রি এপাশ-ওপাশ করছে
বিস্ময়ের একটি বিছানায়
দুঃখ ফিরছে,
ফেব্রুয়ারী রাতে একটি বিড়ালের ডাকের মতো,
গানের ভিড় থেকে হারিয়ে যাওয়া একটি ব্যালাড
আহত স্ট্রিং থেকে আরবী সঙ্গীত
এবং আফ্রিকার বনের মধ্যে প্রাচীন ড্রামের ধ্বনি

আনা, আমি:
একটি বর্শার শব্দ
বাতাসকে চিরে ফেলে
তার শিকারের দিকে উড়ে যায়,
এবং শিকারের চোখে মোচড় দেয়
মৃত্যুর মুখ

আমি
এক ধূসর রঙের অশ্বিনী
নীচে নেমে আসি নদীর কাছাকাছি
বাতাস ও বৃক্ষের দিকচিহ্ন ছাড়াই
এবং আমি
প্রেমিকের ঈর্ষা,
উপপত্নী,
স্ত্রী।

আমি
একটি অন্ধকার রাস্তায় চুরি হয়ে গিয়েছি :
রঙ, সূর্য, ছায়ার প্রতিবন্ধকতায়
এবং অদৃষ্টে



আমি
সূর্যের জন্য ক্ষুধার্ত একটি শস্য ক্ষেত্র,
এবং একটি জলপাই গাছের কান্না
একশো বছরের পুরনো
একটি অন্ধ কুঠার দ্বারা কাটা,
এবং আগুনের ফিসফাস
শেষ নেটিভ আমেরিকান যে পুড়িয়ে ফেলছে জমি
শুকিয়ে ফেলছে নদী

আমি প্রথমবারের জন্য বললাম, "বাবা"

এবং আমি
আমি কাদামাটির কন্যা এবং তার মা।
কিন্তু যখনই আমি সেখানে দাঁড়াই, আপনার হাতে,
আমি আপনার সন্তানের চেয়ে বেশী আর কিছুই নই ।
আপনি,
আমার বাবা





(মূল আরবী থেকে করিম-জেমস-আবু-জেইদ কৃত ইংরেজি অনুবাদের মধ্যস্থতায় )

ইনেস আবাসির জন্ম ১৯৮২ সালে, তিউনিসিয়ায়। পেশায় সাংবাদিক। দেশে প্রচলিত আরবী ভাষাতেই তিনি কবিতা লেখেন। এযাবৎ তিনটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে তাঁর- 'বাতাসের গুপ্তকথা' (২০০৪), 'অন্ধের মহাফেজখানা'(২০০৭)'কোরিয়ার হাজার রাতের কাহিনী'(২০১০)। 

শাওনরঙা কবিতা ১

Image result for centaurus a galaxy

ভাষাখেকো
            -সু চক্রবর্তী

সময় এখন রুগ্ন
পাথরের বাটিতে,
গাছ হবে বলে' দুঃখ ভেঙে
আলটপকা জানালা
পোকা মাছির শর্ত

উল্লাস!

ভালোলাগার বাসনে এঁটো
হাওয়ার সকড়ি
ছাই হাতড়ে মরে তাতে, খিলঞ্জিয়া

(ছবিঃ অশ্বমানব 'এ' গ্যালাক্সি, কৃতজ্ঞতাঃ নাসা ) 

শাওনরঙা কবিতা ২


Image result for milky way

জউঘর
        -সুমনা দত্ত

সন্ধ্যা নামছে।

কাঁচের সার্শি জানালাটাকে মুছে দিচ্ছে পাণ্ডুর রঙে।

গোলাপের পাতাতেও বিষন্নতা।

কল্পিত সবুজের অন্ধকারে
আবছায়ার ভেতর
জন্ম নিচ্ছে অশরীরী
অজ্ঞাতবাস।

এসো প্রেমিক, এসো।

হিমনদীতে বসে সাজিয়ে নাও বরং
সন্তাপের জউঘর।

(ছবিঃআকাশগঙ্গা, কৃতজ্ঞতাঃ অ্যানে ডার্কসে) 

শাওনরঙা কবিতা ৩

Image result for orion nebula

ঐশ্বরিক দর্পণ 
                    -পিয়ালী বসু ঘোষ 

তোমার দু:খ যেনো স্পর্শ অপার
এক ঐশ্বরিক কাচ
মুখোমুখি দাঁড়াই শতবার
কিন্তু চোখাচোখি হইনা

তুমি সময় মাস ও দিন গোনার অঙ্ক কষো
খাতায় টেনে রাখো সহ্যের স্থায়ী জ্যা
ফাঁকা কাচে বাষ্প দেখে দু এক ফোঁটা
দ্রুত মুছে নাও

জমানো অবকাশে
আমিও গনিতের ছাত্র পড়াই
অঙ্কের খাতায় আঁকিবুকি করি ম্লান তোমার মুখ
তোমার দুঃখকে ঐশ্বরিক দর্পণ লাগে
ইচ্ছে করে দুহাত দিয়ে ছুঁই

(ছবিঃ কালপুরুষ নীহারিকা, কৃতজ্ঞতাঃ অ্যালসন ওয়ং)

শাওনরঙা কবিতা ৪


Image result for milky way

'প্রত্যাসন্নে নভসি '
                                              -তন্ময় ধর


সেও এক বৃষ্টির প্রতিবিম্ব
আমি দূরে সরে যাই
কৃত্রিম শব্দ থেকে তুলে রাখি স্পর্শ ও কাগজের নৌকা

কাগজ বহুদূরে যায়
আলোকিত গর্ভদুয়ার থেকে ঢেউ আর ঢেউ
জন্মান্ধ নীহারিকার ফিসফাসে

আমিই মৃত কথা ভেজা অন্ধকার
তুমি মৃত্যুসংস্কারের মতো

এক একটি ফোঁটায় ভিজিয়ে দিচ্ছো সংসার-গোধুলি

ধুলোকে শরীর দাও
সে রক্তবর্ণ মেঘ হোক

রক্তের ভিতর থেকে বৃষ্টির বাকি প্রশ্নের উত্তর দাও

(ছবিঃ ছায়াপথ, কৃতজ্ঞতাঃড্যানিয়েল অ্যাগি)


শাওনরঙা কবিতা ৫

Image result for poster: the ghost nebula, vdb 141

অভ্রমেয়ে
             -হিয়া


দুয়ের আগে নয় হয়
অন্যের অভিমান গায়ে নিয়ে ঘুরলে

টুপি পরে একলা ঘুমোস্‌
তোর বুকে লিখতে চাই একশত দুইকথা
শুকনো পাতার ভাঙা শিরায়
কাগজ উড়ে যায়
দুধসাদা বিছানায় বিকল মনোরথ
ভাঙাবেঞ্চে তাস বুনো হাঁসের দল কিংবা
অসৎ তুই।
যেমনটা আণ্ডারগ্রাউণ্ড চেম্বারে তোকে চিনেছিলাম
তেমনটাই আছিস।
শুধু-জানলা খুলে একলা বারান্দারা।
ঘষা কাগজে শিসের ধুলোয় পায়ের আঙুল।
দুমুঠো...আদর,ব্যাগ খুলে ভরে নেব
                  ক্লাসরুম ছেড়ে।
আসিস্‌।

অভ্রমেয়েরা চুমকি খেলা করে।
মাটি-মাটি খেলা, আরও কতকিছু
পতিত মাটি।
ধূমসো মেয়ে আমি-
মা বলেছে।
একলা কাটি রাত,
নিশুতবেলা গাছম্‌-ছম্‌ ভাঙা বেঞ্চে তাস খেলে বুনো
                 হাঁসের দল
কিংবা অসৎ তুই
ফাঁকা মাঠের ভর্তি রাত,
অসৎ আমি



(ছবিঃ প্রেত নীহারিকা, কৃতজ্ঞতাঃ অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয় ) 

শাওনরঙা কবিতা ৬

Image result for nebula in august sky

পরকীয়া
           -কৃপা বসু

"পরকীয়া" জঘন্য শব্দ। বড্ড আপত্তি আছে, কেমন একটা ন্যাকা ন্যাকা, বোকা বোকা শব্দ, যার আদতে কোনো অস্তিত্ব নেই। আমার চোখে সব প্রেমই সুন্দর, সব প্রেমই পবিত্র। যতক্ষণনা ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠছে, জেদাজেদির পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। প্রেম কখনো ইগোইস্টিক হতে পারেনা।

আত্মসম্মানবোধ ও ইগোর পার্থক্যটা বোঝো, বোঝো। আর কবে বুঝবে?

মানুষ একটা সময়ে স্রেফ দুজনকে সবথেকে বেশি প্রায়োরিটি দিতে পারে, সবচেয়ে বেশি...একজন মননে গুরুত্ব পায়, একজন যাপনে। হ্যাঁ একি সময়ে ছটফোটানো মানুষগুলো একজনের প্রেমে পড়তে পারে, আর একজনকে উজাড় করে ভালোবাসতে পারে।

একজনের কাছে ছুটকো খিদে জমা রাখতে পারে, আর একজনের নিরীহ খিদে মেটাতে পারে...

তোমার বর ফিরলে বাড়ি, হলুদচিনিমাসকাবারির হিসেব সারো নিয়ম করে, কোঁচার গিঁটে আমৃত্যুকাল বেঁধেছো গাঁটছড়া। চায়ের জলে সন্ধেসকাল ফুটতে থাকে নরম পলা। তুমি যে লক্ষ্মীমন্ত নারী, মুখের আদল ছুঁলেও মাটি, দায়িত্বভরা বালতি হয়না ফুটো, বরং কিছুটা ছলকে পড়ে জলের ফোটা, সবটা জানি...

কিংবা "দায়িত্ববান" পুরুষ সেজে অফিসঝোলাদিন পেরিয়ে ডাকটিকিটেই ফিরবে তুমি, রান্নাবাড়িশাঁখার কাছে। ঘুপচি পাঁচিল, লোডশেডিং এর চাদর মুড়ে তোমার সোহাগ গিলবে তোমার পোয়াতি বউ। সেটাও বুঝি...

   ধুর রাখোতো তুমি রেস্পন্সিবিলিটির বেকার বেকার গল্পকথা।

শোনো, শরীর থেকে পালক গেছে খসেই অনেক, এবার বরং অফিসট্রামমশলাঘামের ফোসকাজিভে একবিনুনি লংকাচপের গন্ধ মাখো...


আলগা কাঁটায় ছাড়াতে গিয়ে চুলের জট যার কথা ভাবতে বসো খুব নিবিড়ে। কিংবা বোরিং ফাইল থেকে চোখ উঠিয়ে মুখবইয়ে ঘাটতে থাকো যার প্রোফাইল।

 অথচ সে টের পায়না কি তাইতো! তুমি সিঁটিয়ে ওঠো অভিমানে, রাগের রসদ রাখছো জমা নখের ডগায়।

সে কিন্তু অবুঝ সাজার ভানটা বেশ ভালোই করে, রিং করলেই সাফ কথা তার...
ডার্লিং, সমস্ত দিন আদর খেলে পেট ভরে কি বলো! কাজে আছি, ব্যস্ত আছি, ব্যাস...
তাপ্পর দড়াম করে ফোন কেটে দেয় মুখের উপর।

তুমিও নাছোড়বান্দা ভীষণ। যতই ছিটকে লাগুক রাগের নুন টেলিফোনের তারে।
তবুও তাকে ছাড়বেনা একটুও। সে যে তোমার দায়িত্ব নয় দুর্বলতা, বুঝি বুঝি সমস্তটা।

চুপ চুপ! কেউ যেন না বুঝতে পারে, শোনো শোনো, জানলাখোলা রোদের তুমি ধর্ম জানো? ওরা মনের গোপন জানে, জানেনা ওষুধ কোনো। ওদের যায়না ধরা কোনোভাবেই, ইম্পসিবল! শুধু রাতের মতো ভোর নামলে, ঝলমলানো আলো হয়েই ফুটবে ওরা তোমার মুখেই। সামলে নিও কেমন সোনা!


এত কেন ভাবছো তুমি, হাতটা তোমার বীর্যে ভিজুক, কিংবা লাগুক রক্তস্রাব, সে আঙুলেই কুড়িয়ে নিও জবার ফুল, কেউ বুঝবেনা কক্ষনো।

রাখো, রাখো বিশ্বাস রাখো নিজের উপর,
অধিকারের স্ট্যাম্পপেপারে নাই বা হলো সই, ক্ষতি কি! সে তোমার শরীর নয়, শুধু মনটা ছোঁবে।

দিনের শেষে, সব মানুষই আলোর পোশাক জড়ানো তাসের ঘর, প্রতিটা "আমাদের" ভেতর লুকোনো "আমিটা" কে বাঁচিয়ে রাখার জন্য জোরসে ধাক্কা মারা একটা ব্যথার দরকার।

"বেঁচে আছি" বলার অভ্যেস করার জন্য নয়, বরং বেঁচে থাকার জন্য দায়িত্বজ্ঞানএক্সপেকক্টেশনের মুখে কুলুপ আঁটা একটা প্রেমের দরকার,খুব দরকার।

আসলে কিছু কিছু সময় চার আনার খুচরো শোক আর আট আনার ফিচকে হাসি, শুদ্ধ দুটোই, দুটোই ভালো... কি বলো!!



( ছবিঃ শঙ্ক নীহারিকা, কৃতজ্ঞতা- দ্য গার্ডিয়ান) 

শাওনরঙা কবিতা ৭

Stellar titans of Pismis 24

সম্পর্ক
        -সুমন সাধু

কিছু বাঁচার তাগিদের মধ্যেই পাশ ফিরে শোওয়া
শোওয়াটির পাশে ঘুম
ঘুমের কোটরে চোখে চোখে কথা

আমাদের বিছানাগুলো ক্রমশ ছোট হয়
আরও গুটিয়ে যায়
তারপর স্বপ্ন, দেখা, উড়ান

প্রতিদিন ভাবি সূর্য দেখব
কিন্তু পাশ ফিরে আলতো ঘুম ভাঙিয়ে দ্যায় না কেউ।
চলো, দু'জনে রোজ একটু একটু
চোখের মাথা খাই।

( ছবিঃ পিসমিস নীহারিকা, কৃতজ্ঞতাঃ ইউরোপীয় দক্ষিণী পর্যবেক্ষণাগার)

শাওনরঙা কবিতা ৮



কবিতা
           -শমীক ষান্নিগ্রাহী


যাপন

তোমার গানের ভেতর অনেক লম্বা হল চেনা রাস্তা

ঘেরাটোপ

বোতামের নাগাল পেয়ে অস্থির হয়ে যায়


আমাদের হাঁটাচলা

কফিমগ এগিয়ে দিচ্ছে একটা বিকেলের জন্য


গোল টেবিল

হাতুড়ি নামক শব্দ ভেঙ্গে ফেলে লাইন বাই লাইন


মনোভাব 

রোদ পড়ে    তাই হাঁটাচলা সীমিত



( ছবিঃ থরের শিরস্ত্রাণ নীহারিকা, কৃতজ্ঞতাঃ উইকি ইমেজ)

শাওনরঙা কবিতা ৯

Related image

এঁটো গ‍্যালাক্সি
                -জ‍্যোতির্ময় মুখার্জি


আমাদের এতকিছু বলার থাকে যে, ধীরগতিতে বেশি হয়ে ওঠে আওয়াজ। আমাদের প্রত‍্যেককেই ঘিরে এক গোলাপি আলো। পোস্টার ছাড়িয়ে অঙ্কগুলো যখন পার হয়ে যায় অর্থনীতির ব‍্যারিকেড, দিগন্ত তখন ফোঁটা ফোঁটা অশরীরী


হাতে হাত রাখো


দিব‍্যি পরিশুদ্ধ চোঙাওয়ালা অভ‍্যাসে হেঁটে গেল কিছু ডানহাত এবং বামহাত। হয়তো সেই কারণেই ঘোষণা করছি হৃদ্ভাতারি কবিতায় সারি সারি সিমেন্টিং প্রজ্ঞা ডেকে এনো না। ভেবে দেখো, একটা হাত ঠিক কতটা গভীর হলে আধপোড়া কিশোরীরা বুকসেল্ফ থেকে টেনে নিতে পারে এঁটো গ‍্যালাক্সি







(ছবিঃ অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি, কৃতজ্ঞতাঃনাসা )

শাওনরঙা কবিতা ১০

Image result for nebula in july sky

ভিস্যুয়াল
             -নীলিমা দেব

১.
সন্ধ্যাটাকে টোকা মেরে দেখি
বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে তোমার কেরোসিন
ব্যাস, শাদা আগুন

বাথরুমের আয়নায় লং থিয়েটার

গম ক্ষেতের মধ্য দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে যে কমলালেবু
তার ছায়ায় আমি আলো পেতে শুই ...


২.
উলের সস্‌প্যান এ উল্টে আছে  আধটুকরো  জল
 ফ্রাই হতে হতে শ্যাম্পেন

 আস্কারা পেলেই নীল চাদরের হরফ
 শীত বুনে তোমার হাফ-বর্ষায়

 একটু পরেই আঙুলে আঙুলে  বিজ্ঞাপন
 যাবতীয় ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট ...

৩.
এভাবেও আঁকা যেতো তোমার  মেঘ
                                      কোলের জানালা
                                                            শিওরের স্পেস 
                                                           আরও ...
                                                                    যা যা  ইউনিক

                                             অন্ধকার নামিয়ে রাখি থালায়
                            পোষা শব্দের  ভিস্যুয়াল
একজোড়া চাঁদ  আয়ু রেখে ফিরে গ্যাছে বনে
                             যেখান থেকে শুরু হতে পারতো রাগ বিষয়ক    ...


(ছবিঃ আকাশগঙ্গা, কৃতজ্ঞতাঃ নাসিম মানসুরভ) 

শাওনরঙা কবিতা ১১

Image result for nebula in july sky


জগতবিভুঁই
            -রাজেশ শর্মা

তোমাকে দেখেছি আজ সন্নিকটে

অন্য মনস্ক কন্যাফুল!

চোখ তুলে চাও নি কোথাও


ফুলে ওঠছে বৃক্ষ, দরদালানের স্কাইলাইনার, টনটনে থাম
   
আবছা আবছা করছে জগতবিভুঁই

(ছবিঃ নৌকাতল নীহারিকা, কৃতজ্ঞতাঃনাসা)

শাওনরঙা কবিতা ১২


Related image

কবিতা 
            -শিবু মণ্ডল 

জল সেঁকের এনথালপিতে সেরে ওঠা বিষাদ
চিহ্ন পিঠে নিয়ে আমি উঠে পড়ি সকাল সকাল
চারিদিকে উঠেছে আজ অপেক্ষার মত কিছু রোদ

ঝুলন্ত সেতু পেরিয়ে তারা
চলে আসে, চলে আসে
ঝুম খেতের জানলার ধারে

ছন্দ আর ছন্দহীনের মাঝে দাঁড়িয়ে এক পাহাড়

ধাপ ছোঁবে কি ছোঁবে না ভাবতে ভাবতে
ইচ্ছে হওয়ার মত কিছু আলোআবাদ হয়ে ওঠে

(ছবিঃ নৌকাতল নীহারিকা, কৃতজ্ঞতাঃ উইকি )

শাওনরঙা কবিতা ১৩


Image result for eagle nebula

বর্ষালিপি
-জয়ীতা ব্যানার্জী গোস্বামী
                                                                           (১)
                                                                           বিগতবিকেল
                           প্রতিবিম্বে পাখিদের ঘরফেরা সাজিয়েছি । মেঘ
                                                              একপেশে

                               অবজ্ঞার বাতাসে ফুঁ । বজ্রপাত একটিই ,তাও
                                   বিস্মৃত একদা প্রিয় লিরিক যেমন উদাসীন

                                আলো হয় । তারপর শব্দ ভাঙবে বলে চোখ
                            গোপন তোরঙ্গ থেকে ব্যথার পুতুল পেড়ে আনে

                                                        (২)

                               মেঘসারি । যেন এক অচেনা শহরে তার বাসা
                         কতকাল দেখেনি সে স্নানে পাওয়া পাখির আদল
                                বটের পুরোনো নাম ,বিস্মৃত ঘাটের অতীতও

                                                                পায়ে পায়ে ধুলো মরে
                                      গায়ে গায়ে প্রত্ন দেওয়াল
                                 বেঁধে রাখে ফি বছর পলাতক ফসলবিলাস

                         পোড়ে আলো । নিভে এলে পরিপাটি ঘুমন্ত শরীর

                                        থেকে একলাতুতো ফোঁটারা ঝরে পড়ে

(ছবিঃ ঈগল নীহারিকা, কৃতজ্ঞতাঃ নাসা ) 

শাওনরঙা কবিতা ১৪


Image result for eagle nebula



বিজ্ঞাপন
             -পিয়াল রায়

প্রচার সম্বন্ধীয় আমাদের কোন শাখা নেই

তবু যারা এসেছে
     প্রত্যেকের নামে আলাদা আলাদা
বৃক্ষ রোপণ করেছি আমরা

আলাদা আলাদা ধ্বনি  শরীরী অশরীরী


ভয় থেকে মৃত্যুর দিকে যেতে অপারগ
     এমন অজস্র বুদবুদ
চেয়েছিল সোনার অট্টালিকা
মহার্ঘ পোশাকে ঢাকা মসৃন পাখিদের ফুটে থাকা
উজ্জ্বল ছায়া


এসব আমাদের কোনোকালে ছিল না দেওয়ার মতো
তাদের জন্য রাখা আছে জাগ্রত অন্বেষণ


এর বেশি আমরা আর কী করতে পারি?
কেবল একাগ্র অপেক্ষায়
             অপ্রস্তুত বার্ধক্য ছেঁকে তোলা ছাড়া

(ছবিঃ ঈগল নীহারিকা, কৃতজ্ঞতাঃ নাসা) 

শাওনরঙা কবিতা ১৫

Image result for nebula in july sky



মিষ্টান্ন ভাণ্ডার
                     -সুকল্প দত্ত

গর্ভবান কারিগর
নিশিদিন ময়দা থেসেথুসে
দধিমন্থনকালে
অন্তরীপ গড়ে
আমি ওর ঘাম খেয়েছি
গজালে টাঙানো থলে থেকে
ক্রমাগ জীবননদী
ঐ তো মাঝি
দেখে যাই
নবরস চুঁইয়ে পড়ে।

                                       




(ছবিঃ কালপুরুষ নীহারিকা, কৃতজ্ঞতাঃ ইউরোপীয় দক্ষিণী পর্যবেক্ষণাগার )