বর্ণপরিচয়
-কৃপা বসু
হলুদ
অপেক্ষার বাড়িরা শীতের রঙ মেখে বরফ হওয়ার আগেই, ফিনাইল গন্ধে ভরে যায় ঘর।জানলা খুলে চুল মেলে দিই কার্নিশে। মাগরিবের ধুলো ছুঁয়ে পুতুলঘর থেকে উড়ে আসে ঝিমধরানো আলো। ঠোঁটে,মুখে,চোখে মেখে নিই আলোর পবিত্র স্নান।
অ্যাসফোডেলের চিবুক বেয়ে ঝরে পড়ে ঘাম।মৌনতার ভেতর ঘুরতে থাকে হলদে স্মৃতির আর্মেচার।
লাল
টার্টারাসের পাশে জেগে ওঠে অন্ধকারের সিংহদুয়ার। মেঝেতে শুয়ে থাকা মৃতদেহের সারি,বারবার টিমটিমে লাল আলো ভেবে ছুঁয়ে ফেলি ভুল করে। শিয়রে চুপিচুপি বসে নিরামিষ আয়না।
শিশিরের নাভি চিরে ছুটে চলে রাতের ট্রেন।
সাদা
গঙ্গাস্নান সেরে ফেরা থান পরিহিত স্ত্রীলোক দেখলে, বোগেনভেলিয়ার চূড়ায় ভেঙে পড়া মেয়েলি চাঁদের কথা মনে পড়ে।
মধুক্ষরা জোছনা বিলিয়ে নিঃস্ব হতে শেখায় সে আলো।
বিধবা ভাতের গায়ে জমাটবদ্ধ মাখনের স্তর।
লজ্জাবস্ত্র ছিঁড়ে কেউ কেউ
প্রিয় বসন্তের খোঁজ করে এখনও বিষভান্ড ভেঙে।
আসলে সাময়িক ঢেউয়ের সাদা সুতোয় ঘর নয় গোটা সংসার বুনে ফেলে অনেকে নির্দ্বিধায়।
কালো
শঙ্খমেঘে ঢেকে যায় বিবিক্ত আকাশ।
পাথরে পাথরে গাঁথা জীবাশ্মের প্রিয় ভাষা।
সরসীকোলে নিভে আসে সোমগন্ধী প্রদীপ।
বাইরে ঝরে পড়ে হিমের কুঁড়ি লুকিংগ্লাসের গায়ে।
ভিতরে সাপের পোশাক বোনা হয় পুরুষ্ট শীতের উলে।
তিলং রাগ সন্ধ্যাকালীন এক অসুখের নাম।
জানলার কাঁচে জমা টাটকা স্মৃতিফুল।
লেবেল সাঁটা দুধের দামে জলের প্যাকেট কেনে কৃষাণি।
দূরে কোনও এক চিলকন্যা নো ম্যান্স আইল্যান্ড দেখবে বলে ছোঁকছোঁক করে।
(ছবিঃ সুরেশ তালোর )
No comments:
Post a Comment