Monday, 9 December 2019

মৃগশিরার মাসের কবিতা ৪

Nude Descending a Staircase No.2 by Marcel Duchamp

জরায়ুফুল
         -সোনালী মিত্র



একটা অসমাপ্ত সঙ্গমের মধ্যে রেখে চলে গেলেন যুদ্ধক্ষেত্রে। কুমারী সাগরের গর্ভে কম্পাসহীন জাহাজ ফেলে পাটাতনের কাঠ ধরে ভেসে গেলেন কোথাও ! হে সামরিক ইউনিফর্ম , চলে গেলেন শিকারি-দ্বীপে অদ্বিতীয় জাহাজ ও আমাকে ফেলে । ভাসমান দ্বীপে বিষাদী সানাইয়ের মধ্যে দীর্ঘ হতে থাকল আমাদের সম্পর্কের অনুশাসন । আপনি ফিরবেন বলে ব্যক্তিগত সৌন্দর্যগুলি দেরাজে গুছিয়ে রাখি; লোকচক্ষুর আড়ালে। সৌন্দর্যরা বড় ভয়ে থাকে । কাজলের মধ্যে লুকিয়ে রাখি ফিরবার প্রত্যাশা ।চিঠিতে লিখেছিলেন, আপনার ফাইটার জেট থেকে মরুভূমির সূক্ষ্ম বালুকণা পর্যন্ত স্পষ্ট দেখতে পান , অথচ , আপনি নাকি এ বাড়ির মাথায় চক্কর দিয়েও বুঝতে পারেন না কোনটা আমাদের বেডরুম। আমি প্রতিটি স্বপ্নে দেখি শত্রুশিবির তছনছ করে এগিয়ে আসছেন আমার ব- দ্বীপে । হুড়মুড় করে ঢুকে পড়ছেন আমাদের বেডরুমে।যেখানে আমার গোলাপি রঙের খোলওয়ালা ব্রেসিয়ার, টুকরো টুকরো পাপ নিয়ে বিসদৃশভাবে ঝুলছে ! বিদায়ের আগে বারুদের গন্ধ নিয়ে যেবার চুমু খেতে খেতে বলেছিলেন, অল্পতে খুশি হতে পারলে সুখের অস্তিত্ব থাকে না । সুখ রেখে দিও দ্বীপের নির্জনে ।


একাকীত্ব আর নির্জনতা বড় আপন-প্রিয় । আপনার ছোট ভাইটি লজুক বড় । রমণের ঐশ্বর্য নিয়ে যে ফুল ফোটে তার রেণুতে রাখি অতৃপ্তি আত্মাকে ! তার লাজুকঠোঁটে ভেঙে যায় আমার নিষিদ্ধ বাঙ্কারের গুহালিপি । আপনি কি তখন রাইফেলের আশ্চর্য বুলেটের গন্ধ নিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন গরিলা বাহিনীর সাথে বিদ্রোহী বাঙ্কারের দখল নিতে!স্থান দখলেই লড়াইয়ে গ্রেনেডের মধ্যে গর্জন করে উঠছেন কি স্বভাবতই?এই একবছরের মধ্যে প্রতিটি পত্রের গায়ে বত্রিশ রকম শৃঙ্গার আসনের কথা লিখে প্রলুব্ধ করেছিলেন নারীক্ষেত্র।আপনাকে বলা হয়নি,আসলে আপনাকে বলতে পারিনি,আজকাল স্বপ্নে দেখি বরফ চাদরের ভিতর শক্ত হয়ে যাচ্ছে আপনার গামবুটসুদ্ধ শরীর। আপনাকে বলা হয় না আপনার সমর্পিত অবাধ্য ঈগলটিকে পোষ মানানোয় বিদ্যায় আজকাল আমার চোখের কোলে কালি,আজকাল ওয়াক টানে শরীর ...কেমন করে বলি তিনমাসের গর্ভবতী ...সেই জরায়ুজাতক খুঁজবে না পিতৃপরিচয় !

(ছবিঃ মার্সেল দুশঁ) 

No comments:

Post a Comment