Friday, 15 June 2018

উষ্ণিক প্রাবৃষা সংখ্যা

Related image

"ধূমজ্যোতিঃ সলিলমরুতাং সন্নিপাতঃ ক্ক মেঘঃ
     সন্দেশার্থাঃ ক্ক পটুকরণৈঃ প্রাণিভিঃ প্রাপনীয়াঃ"  

উষ্ণিক
প্রাবৃষা সংখ্যা


প্রাবৃষার অনুবাদ কবিতাঃ পোল্যান্ড থেকে তাতেভ চাংখিয়ান






অনুবাদকের উদ্দেশ্যে স্তোত্র



প্রথমত, তারা তোমার শরীর অনুবাদ করে,
তারপর তোমার কবিতা,
অবশেষে, এক দুর্ঘটনাগ্রস্ত সকালে
তারা তোমাকে ফেলে যায় অপরিচিত নগ্নতায়
তোমার জানা শব্দের সামনে,
চিন্তিত এবং অসহায়,
এমন একজনের মত যে জানেই না
একটি গর্জনরত কুকুরকে  কিভাবে শান্ত রাখতে হয়
এক বিদেশী ভাষাগ্রস্ত শহরে


এক্স-রশ্মি


কেমন নীল-নীল-নীল
কেমন শান্ত আলো, হালকা
কত সহজে আর স্পষ্টভাবে
এই নীল-নীল-নীল
অতীতের ধুলো

বসে পড়ে অস্থিসন্ধির ওপরে...


রাজপথের রুক্ষতা 

নীরবতা বজায় রেখে
একে অপরের দিকে
অবতল আরশির ভিতর দিয়ে তাকিয়ে
নীরবতা রেখেই
হাওরের জল ঢুকে পড়ে আমাদের সমুদ্রযাত্রায়

কবিতা ছাড়াই আমরা পেরিয়ে যাই

( ছবিঃ কবির ব্যক্তিগত ওয়েবপাতার সৌজন্যে )
( অনুবাদ- কবিকৃত ইংরেজি অনুবাদের মধ্যস্থতায় )

প্রাবৃষার আশ্চর্য ধারাবাহিকঃ হারিয়ে যাওয়া নব্বইঃ পর্ব ১১

SDIM2381



“পৃথিবীর যাবতীয় অধর্ম থেকে উৎপন্ন, সকল পাঠ্যপুস্তক থেকে দূরে, আমি রয়ে গেছি”
                                 অনিন্দ্য রায় 

( ... দেবরাজ চ্যটার্জি, আবার )

বাংলা কবিতা এই দুই দশকে অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছে, পাখি কি সেই খবর রাখে না ?
আমরা এক নতুন মিলেনিয়ামে বসবাস করছি, বেঁচে আছি ডিজিটাল সময়ে; সুকুমার প্রবৃত্তিগুলো স্মার্টনেসে ঢাকা পড়ছে, পাখি  জানে নিশ্চয়ই, তার নাগরিক জীবনে ক্রিকেট আর বিনোদন মিশে যাচ্ছে, ধ্রুপদীয়ানার দিন শেষ হয়ে লাফিয়ে উঠছেন চিয়ার লিডার; কবিতা, হ্যাঁ, কবিতা কি আর নিরাময় হতে পারে এই সময়ের, এই যাপনের ক্ষতগুলির ?
“এখন সব বিশ্বাস নদীতে রাখি
কোম্পানির গভীর জলবায়ুতে বাঁধি
নক্ষত্রের ডিম ফেটে অলৌকিক ঘোড়াগুলো
ভিজে যায় কালো জ্যোৎস্নায় –

আমাদের ভুলে যাওয়া ডানার মুচড়ে দেওয়া ব্লেডের গায়ে
যদি একবার হাত রাখা যেত
যদি বলা যেত মানুষের বয়স হলে
তার রক্ত কিভাবে, ধীরে ধীরে

ক্রমে, অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যায় ।”
( আধার কার্ড )
কিন্তু বয়স হলেও একজন কবির কাছে প্রাসঙ্গিকই থেকে যায় শব্দমালা ।
যেমন দেব্রাজ চ্যাটার্জি, আমাদের নব্বইয়ের পাখি, এতদিন পর তার বই বেরোনোর প্রস্তুতি, তার কবিতার  বই ‘কলকাতা ২০/২০’ পাঠকের হাতে তুলে দেওয়া হবে বিনামূল্যেই। আগ্রহীরা যোগাযোগ করবেন কবির সঙ্গে সরাসরি অথবা আমার সঙ্গে ।
ইতিমধ্যে আমরা পড়ে নিই দেবারাজের আরও কিছু কবিতা

“ এইখানে লিখে রাখি ধুলো, ঝড়
  আর ফূটপাথের ঘাস থেকে লাফিয়ে ওঠা প্রাণ
শহরের বুক জুড়ে এওখন গোলাপ উপত্যকা
আর গোলাপি মেঘেদের ঢালাও সংঘটন ।”
           ( গোলাপি বিপ্লব )

“ মানুষ মারা গেলে
  পরদিন ভোরবেলা –
  তার চশমা আর ট্রুথব্রাশ –
  ভীষণ একলা হয়ে যায় ।”
( বন্ধুবান্ধব )

“ আকাশে উড়ছে ঘুড়ি, এখন কার্ত্তিকমাস
  কমলালেবুর গাছের মাথায় ফোটে নক্ষত্রের ঝাঁক
  আমি বেশ কয়েকটা গণহত্যার আয়োজন গুছিয়ে ফেলি অনেকদূর ।

যেমন এই প্রজাতন্ত্রের অন্তর্গত যাবতীয় স্বরবর্ন, ব্যঞ্জনবর্ণদের
এক জায়গায় জরো করে, একে একে পুঁতে ফেলি, আমি এই পৃথিবীর
ঢোল, উঁচুনিচু, মাতৃতান্ত্রিক পেটের ভেতর। ”
( জেনোসাইড )

“ কাকে দিয়ে যাব প্রিয় ?
  ক্ষমাহীন ক্রোধ দেব কাকে ?
  অঢেল অশুভ রক্তের ভেতর আমাদের দেখা হল
 ভালোবাসার কথা কি আর আমায় মানে ?”
( সাতশো তারার তিমিরে )

“ আমি বৃষ্টি, ঝড়, ঘুম, স্বমেহন, দিন, সফলতা, শস্য, মানুষ শয়তান দেবতাকে চুরমার
  করে রয়ে গেছি । পৃথিবীর যাবতীয় অধর্ম থেকে উৎপন্ন, সকল পাঠ্যপুস্তক থেকে দূরে, আমি
রয়ে গেছি । আমি । আমি ।

এবার পূজাভ্রমণে তুমি কতদূর যাবে আমি কেবল বনভূমি দেখালাম ।আমি কেবল
অন্ধকার দেখাব ।”
( আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয় )
ওই অন্ধকার দেখার জন্য আমরা অপেক্ষা করে আছি ।
বইটি প্রকাশের জন্য দেবরাজকে শুভেচ্ছে ।
জানি, সে ‘পৃথিবীর যাবতীয় অধর্ম থেকে উৎপন্ন, সকল পাঠ্যপুস্তক থেকে দূরে’ রয়ে গেছে । কবি । পাখি ।


( ছবিঃ ক্রিস্তান বাজ্ঞালে) 

প্রাবৃষার কবিতা ১২

Related image

বিকল্প
          -প্রদীপ চক্রবর্তী

নিজস্ব থেকে দূর , জল থেকে অদূর
ক্রমশ নিঃশেষের হলুদবরণ ফুল অবদি
সেও তো সাতসুর নিয়ে স্থির |
সময় তরঙ্গাবলি |
বিকল্প কুসুমিত পিয়ামুখ ,
কীসের টানে মরসুমি রেওয়াজে
দৃশ্যত যে মেয়েটি ,
প্রথমবার
              ভুল
               বিনিময় করে ...!

রক্ষিত বনের মতো আকাশছোঁয়া
শিশির বিষয়ী বসুধা ,
যে কোনো গোপন , একটুখানি ভাঙা পাত্র
একটুখানি ছা - পোষা সবুজ
                   চকিত ছড়িয়ে যায় ...

পূর্বাপর , স্পর্শাতীত ভুল থেকে
উপদ্রুত পতঙ্গের ঝাঁকে
মন্থিত পাখি ওড়ে ...

মুঠোর মধ্যে পাহাড়তলীর পাথর ...
পুনরাবর্তনহীন ,
                 স্পর্শাতীত শরীর থেকে ,
গোলপাতা
                বনে
                      হেঁটে আসে
                                ছায়াবাঘ ...

( ছবিঃ জিয়ানে বেসেট ) 

প্রাবৃষার কবিতা ১১

Image result for abstract rain


 সাড়াশব্দ পিছিয়ে গেলে
                   -সম্পিতা সাহা

অনবরত পিছিয়ে পড়ছি,
কবেকার বাদামি আলো ছেঁকে নিয়ে
সবাই খেয়ে ফেলছে ন্যাড়াকান্না।

অত কথা বলতে হয় না এসময়...
সমস্ত ইমোটিকন পেনশন দ্যায় আমাদের,
নতজানু হয়ে বসে থাকে একটা ভ্যাবলা ঘ্রাণ
আর একটু একটু করে তোমাকে জুড়ে দ্যায় অন্য কারো সাথে।

কারবালার মাঠ থেকে তুলে আনি মৃত্যু,
অস্থি আর ঘি পোড়ার গন্ধ একেবারে এক...
একটা শুধু জলে ভাসে, আরেকটা মিশে যায় আদ্যোপান্ত।

কত কী কিনে আনি নিজের জন্য,
সমস্ত পছন্দ কেবল অভ্যেস'রা চেনে।
পোড়াজল। হাতে লেগে থাকে এলাহি আয়োজন।
অথচ হাতে হাত ঘষতে ঘষতে উঠে যায় চেনা উত্তর।

একটুআধটু করে কোনো মুখস্থই মনে থাকেনি একটানা...






( ছবিঃ লী ফিটস )

প্রাবৃষার কবিতা ১০

Image result for abstract rain

লিফটের ভেতর 
                         -নীলাব্জ চক্রবর্তী


এই যে অক্ষরগুলো, শব্দগুলো
লিফটের ভেতর সেজেগুজে
নিজেরা নড়েচড়ে জায়গা করে নিয়ে দাঁড়াল
আর
বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়ল
ভারী স্মৃতিরা
পর্দা থেকে দূরে
পর্দার রঙ উড়ছে
স্পিড-ব্রেকার
এই দুঃখবোধ আসলে যৌনতার অর্থোগোনাল হয়ে
সারাদিন এক আয়না ঘষতে ঘষতে
আই রিপিট ইয়োর অনার
ফ্রেম
একবারই ভাষার কাছে এসেছিল...

( ছবিঃ কাইরি-ইস-ডার্ক )

প্রাবৃষার কবিতা ৯

Image result for  shadow paint  rain

আর্ট অফ লাইফ
                        -অনু সঞ্জনা ঘোষ 

দু একটা ভুলের পর শিখে নিয়েছি পা গুনে গুনে চলা। পুরোনো স্বভাব, চোখে চোখ রেখে কথা বলা। মুঠো ভর্তি জড়ো হয়েছি আমি। কান জেগে শোনে বাতাসের কানাকানি....

শিরায় শিরায় এখন ছুটন্ত ঘোড়া। দাবানল গ্রাস করেছে লোহিত কনিকা।

মন মস্তিস্ক গ্রাফ শিখে নিচ্ছে।শিখে নিচ্ছে জ্যামিতিক ওঠা নামা।

 হাওয়ার উড়বে পতাকা..

(ছবিঃশাটারস্টক) 

প্রাবৃষার কবিতা ৮

Image result for  shadow paint  rain

ঢেউ
        -শিবু মণ্ডল

১।
ঢেউয়ে ঢাকা অবসর
চেয়ার ছুঁতে চায়
বই-তাকে তুলে রাখা সেগুনের ফাঁকটুকু
জানলার বাইরে পালায়
২।
কালো ঢেউ সাদা ঢেউ
পূর্ণ অধিকার চায়
মিছিলে এসে মিশে তারা
বানভাসি দৃষ্টি ভেসে যায় কলার ভেলায়
৩।
রাতজাগা বাঁধ
ঘুমের ছদ্মবেশে নদী হতে চায়
ভাঙতে ভাঙতে নিজেকে
সংবাদ হয়ে যায় !

(ছবিঃ হাইডেল ব্রুকস)

প্রাবৃষার কবিতা ৭

Image result for rain abstract painting

চিরসখা হে
                    -সু চক্রবর্তী

সেই কবে বানভাসির জলে দেখা হয়েছিলো একবার
আর তারপর থেকেই ঈশ্বর আর আমি একে অপরের অপরিচিত।
নাম শোনা দূরে থাকুক গন্ধও শুঁকি না
রংগন ফুলের গুচ্ছ বুকে নিয়ে যে বার আগুন উঠেছিলো ধরায়
সেই দিনটা নাকি তার জন্মদিন ছিলো
কোলে মাথা রেখে এসব কথা বলেছিল আমায়

একে একে কেটে গেছে হাজার বছর


ঈশ্বর আমার কথা হয় না



আমি আজকাল ঈশ্বরহীন বেঁচে আছি

(ছবিঃ ইয়ুল ওলাইভার) 

প্রাবৃষার কবিতা ৬

Image result for rain abstract painting

নিজস্ব জলাধার
                  -জয়ীতা ব্যানার্জী গোস্বামী

             ...পোড়াতে এমন পারো বলোনি কখনও
                          
নাভি বেয়ে নেমে গেছে ,যেখানে গভীরে 
                                         প্রতিবিম্ব আলো হয়

ওর কেঁপে ওঠা শেষ ধাপে
ছায়া বোনা বট আর ছাতিমের একরোখা সুখ 
বিলি কেটে ফিরে আসে
                                 কাজলের খেয়ালি আঁচড়ে

পায়ের পাতায় স্নেহ অতলের ভেজা ঘ্রাণ যেন
আখরের টুপটাপ অধরে মিটিয়ে দেনা
                       ভ্রমর জমায়
                                     নকশী কৌটো ভরে
                                                 আর 
স্নানান্তে কবিতারা জল ভেঙে পাড়ে উঠে আসে
                
 নীরবতা ভেঙে আসে সুসময় , জলের আদলে 
জল ,
      এমন পোড়াতে পারে ,বলেনা তবুও 

(ছবিঃক্লারা বার্টা) 

প্রাবৃষার কবিতা ৫

Image result for rain abstract painting

কন্দর
         -হিয়া

জলেরা কাল পাগল হয়ে গেছে।
                 অবনত ছায়া।
              তোমার কাছে এলে কথারা তীব্র হয়ে ওঠে
             তোমার কাছে এলে, মনে হয় সহস্র শরীর
                               বাসা বেঁধেছে আর একসাথে
            চুলোচুলি করে
      খুলে দেবে
                                                    প্রেমের গিঁট।
                এরপরও ফোনে ক্রমাগত রেচন করে চলেছি
                                                  দেহহীন মন।
     বাঁকাচোরা সমুদ্রস্রোতে ক্ষত লবণাক্ত।
                                                                     


(ছবিঃ লৌরি লেগার্দ)

প্রাবৃষার কবিতা ৪

Image result for rain photography

'কন্ঠাশ্লেষপ্রণয়িনি জনে কিং পুনর্দূরসংস্থে'
                                      -তন্ময় ধর


রক্তাক্ত ঈশ্বরের বিজ্ঞাপন থেকে আমি সেই সশব্দ দেবদারুপাতা বের করে আনি। মৃত কাগজের ভাঁজে সে নৌকার অভিনয় করে। বোবা হাওয়ার শরীরে বৃষ্টি শুরু হয়। তিক্ত এক জন্মান্তরের গল্প থেকে এক টানে মুখোশ খুলে ফেলে শিশু অভিনেতা

মুখোশের ভিতর চিন্ময় চ্যাটার্জির গলায় বিঁধে আছে রাগ সোহিনী। ডাকনাম মুখস্থ করতে করতে বাতাস ফুরিয়ে আসছে। শূন্য জঠর, শূন্য বিছানা, শূন্য কোষপর্দা -কোথাও বোকা বৃষ্টি থামছে না। ভিজতে ভিজতে আমরা সিনেমা হলে ঢুকে পড়েছি

সে সিনেমা হল ভেঙে শপিং কমপ্লেক্স ঢুকে পড়ল আমাদের ভুলভুলাইয়ায়। ডিসকাউন্টের ছাতার নীচে তোমার গানটিকে দাঁড় করিয়ে রেখে আমি অন্ধকার ট্রায়াল রুমে ঢুকে পড়লাম। আর পাশের রেস্তোরাঁয় ঢুকে পড়ল মালাইচিংড়ির গন্ধ। 


(ছবিঃ ফিলিপ ওয়াগনার)





(ফটোঃ ক্রিশ্চিয়ান ক্যালজোন) 

প্রাবৃষার কবিতা ৩

Image result for rain photography

রোমান্টিক বিষন্নতা
                           -রঙ্গন রায়


 _(উৎসর্গঃ জানুয়ারী)_


এখন থেকে ডিসিপ্লিনড হবো
সর্দি বাঁধাবো না আর কথায় কথায়


বান্ধবীদের অপেক্ষায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে
অর্ধেক জীবন কাটিয়ে দিলাম


সাঁতারের পোশাকে চশমা ছাড়া একবার ,
শুধু একবার দেখবো বলে বেঁচে আছি


দোতলার ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে থেকো
সাইকেল আমায় নিয়ে পৌঁছে যাবে


ভুল করে অজস্র নারীকে ভালবেসে ফেলেছি
'শুধ্রে'টা শুধরে নিতে পারিনি


তুমি সমুদ্র ভালোবাসো , আমি পাহাড়
এ জন্যই নদী বয়ে যায়


বৃষ্টিতে সাইকেল ভিজছে
ঝড় চলছে ইথার তরঙ্গে


দার্জিলিং মেলের কামরায় আপার বাঙ্কে শুয়ে
ব্যোমকেশ পড়ছো , হুহু করে ভালোবাসা পেরিয়ে যাচ্ছে


'আমি বলি!' বলে তুমি চুপ করে গেলে
চুপ করে থাকা শিখছি।

১০
পরস্পরকে চিনে ফেলেছি আমরা
নিঃশব্দ তুষারপাত হচ্ছে দার্জিলিংয়ে

(ফটোঃ লিওনে ক্রেটেন) 

প্রাবৃষার কবিতা ২

Image result for rain photography

এখানে মদ্যপান মানা ১
                            -আকাশ গঙ্গোপাধ্যায়


শেয়ালে শেয়াল রাখছি
গিরগিটিগোষ্ঠিদ্বন্দ্বে দিয়ে
খেলাও এগোচ্ছে আর
পাজ্‌ল ফুরিয়ে আসছে হাতে
দূর দেখছ, আগুন রাখছ, লালা রাখছ স্থিতিস্থাপক জাল
সাপ ও সিঁড়ির মাঝে ঘুমিয়েছি বেহেড মাতাল



মগজ মগজ ঢেউ
বিজ্ঞান কলোনি থেকে উঠে আসছে নুয়ে পড়া মঠ
লাইন পড়ছে খুব
আধার দেখাতে হলে সীবনীসহায়
যে মহিলা নেই আর, বহু অ্যাকাউন্ট ঘেঁটে
গলার শব্দটুকু খুঁজে পাই ঠিকানাসমেত
এগাছে কাঁঠাল এলে ওগাছে খেজুর ঝরে যায়


দু’ফোঁটা চাঁদের রস
          প্রতিষ্ঠানে পা পিছলে যারা
ফোলিও বাদাম থেকে পাতা হয়ে ঝরে পড়ল ঘাসে
তাদের যত্ন নাও, ড্রাই ফুড, সাপ্লিমেন্ট দাও
আমাকে ধারণ করবে এতখানি জায়গা খুঁজে রাখো
একশৃঙ্গ হরিণ আনো, মেটে কাটো, পাঁজর পোড়াও
সৈন্যদল ভেসে যাক ব্রহ্মপুত্র-যমুনা কোরাসে


পাউডার শরীর মাখছি
তুষ দিয়ে উল্কি আঁকছি গমে
এসো হে উপত্যকা অববাহিকার কোলে বসো
এমন নষ্টযাত্রা লিঙ্গে বেঁধে সতত ওড়াও

কার বা রয়েছে সাধ্য, অশ্বমেধে ঘোড়া রুখে দেবে!



(ফটোঃ ম্যারি ডিনিন)

প্রাবৃষার কবিতা ১

Image result for rain photography

লিখন
        -উমা মন্ডল

এই যে দিগন্ত বিস্তৃত আয়ুরেখা
জঙ্গল নদী পাহাড় বহন করে এগিয়ে যায়
তার ওপর হাঁটতে ভালো লাগে।
এই যাত্রা অনন্তের
কখনও বন্ধ্যা জমির চোখের নীচে কালো দাগ ,
আবার কখনও পলাশের মৃত কোষের কান্না
রাত্রি আকাশের উজ্জ্বল ধ্রুব পাতায় লিখে নেয় ,
উঁকি দিয়ে তার খাতাখানি দেখতে লোভ হয়
খাতার আঁকাবাঁকা রেখাচিত্র তার ওপর জালের নিপুট বুনন ,
জন্মাষ্টমীর রোহিনী নক্ষত্র দেখে নিয়েছে
আমারই মতো কপাল কিনা।

তিমি জলে ডুবে থাকে
কখনও শ্যাওলা তুলে দিতে সূর্য হাত বাড়িয়ে দেয় ,
কপালের জমির ওপর এক কাকতাড়ুয়াকে
রেখেছি অশুভ বিদায়ের জন্য ,
তবুও ফুটো ফুটো গর্ত করে প্রত্যেকদিন
ছাই রেখে যায় মূর্খ দাঁড়কাক


( ছবিঃ গুগল ইমেজ)