Sunday, 1 December 2013

অঘ্রাণের কবিতা ৭



উপকথা 
    -হাসান রোবায়েত

১. 

যেন মূহুর্তেই ডাল থেকে খসে পড়বে বাঘের ঘ্রাণ;
 সেইসব অনাঘ্রাত হরিণের প্রতিলিপি লুকিয়ে রাখছে জেলে। 
রক্তবীজ অথবা কার্পাস ফলের কোয়ায় নেমে যাচ্ছে 
হিমবাহ... কে তার পাখির খাঁচায় চাষ করে জল ? 
সমুদ্রকে বার বার ধোঁয়াবালিশের পতন বলেই
 ঠাউরে নিচ্ছে চাঁদ যে কোন খুনেই 
পালিয়ে যাচ্ছে লাল, স্ট্রবেরীর ছায়া । 

২. 

পাতার আকাশ জুড়ে 
যে সব পাখি পুড়ে যাচ্ছে রতিসন্ধার হাওয়ায় 
নিষ্পত্র অ্যাকুরিয়াম কবেকার কাচ শিখে 
তুলে নেয় রোদের আওয়াজ এই বনভূমে, 
শেয়ালের পা থেকে যেসব নূপুর খসে গেছে
 কুমিরপাঠের আশায়... মিথমুগ্ধ জাম, গাছের আড়াল থেকে 
ছুঁড়ে দাও যেসব সত্য তার ভাঁজ খুলে 
অবনত হচ্ছে ডুমুর বোঁটার ড্রিবলিঙে

অঘ্রাণের কবিতা ৬

সামাজিক 
- বেবী সাউ 

আজ ঘুম পাচ্ছে কেননা , 
প্রত্যহ আমরা ঘুমুনোর ভান করে এসেছি 
ট্রেনের বাথরুমে কন্ডোমের প্যাকেট
 চাকায় রক্তের দাগ 
এসবের মাঝে সিলিং ফ্যান ঘুরছে 
হাওয়ার মজলিসে জমে উঠছে এতদিনের না-জেগে থাকা না ঘুমানোর কবিতা 

মিউজিক সিস্টেমের ভলিউম ... 
আহে ! ভলিউমটা একটু বাড়িয়ে দাও 

শব্দময়তাই শব্দকে ঢেকে দিতে পারে 
আর ঘুম শব্দহীনতাকে
















অঘ্রাণের কবিতা ৫


হারভেস্টিং
-তন্ময় ধর



সাবানের গন্ধ মানে
ছায়ার ঠোঁট থেকে একটা পাখি শ্বাস নিচ্ছে

স্নানফল
আমের অন্ধত্ব

একটা নীল রঙ চুমুকে নিয়ে যাচ্ছে সকালের ইস্কুলে

টিফিন-টিফিন খেলা
    ভেঙে
দেবীর রোদ্দুর জমে যাচ্ছে সেফটিপিনে

এখানে আইসক্রিম ডাকলে হত

ভাঙা বরফে
একটু কেঁদে উঠত প্রেমের গল্পটা
    স্বপ্ন দেখে

হাজার হিমযুগের অপেক্ষায়,
 নাভিকুন্ডলে

 ভেঙে পড়া পুরুষ্টু খিদে...

অঘ্রাণের কবিতা ৪

অপেরা
- দেবাঞ্জন দাস

আদরের জন্য ও ঔ 
আর কথা হয় হসন্তে 
পার্ক বলে চিনছে 
আর বিছানার লেক্সিকান ভরে উঠছে
 গোল রোদ
 গোলগাল রুয়ামে 
আমার চোখে কি দৃষ্টি খোঁজে ? 
দারু পূর্ণিমা 
না চেয়েছে বলেই রোদ 
নিঃশ্বাসের যতিচিহ্ন 
ফেরার সময় বড় চোখ
 কবিতাকে গল্প শেখাচ্ছে 
হাত নেড়ে ...

অঘ্রাণের কবিতা ৩


শোকপ্রস্তাবের ভূমিকায়
-নীলাব্জ চক্রবর্তী



প্রতিটি ক্ষমা ও প্রতারণার মাঝে
ঈষৎ মায়াবী
একজন অল্টার ইগো
দাঁড়িয়ে             থাকেন

তাঁর ইনবক্সে আরও একটু রোদ্দুর

কাঁচের দুপাশে
যাক          আসুক
দুরকম আলো
তাদের একটাই হরফ ফুটে ওঠার সময়
দেওয়াল থেকে দেওয়ালে
ছায়ার সঅঅবটুকু
গিলে নিচ্ছে
আর
সারারাত             ওভারল্যাপ করছে

বরফের পোশাক-আশাক...

অঘ্রাণের কবিতা ২



পর্যটন
-শৌভিক দে সরকার

প্রকারান্তরে একটি দরজা আর
    একটি মৃত রাস্তা

ভাষার দাহ্য পিঠ
বসন্ত আর লোল ডানা

প্রকারান্তরে ঐ দরজাটি ঘুরে যাচ্ছে শুধু
নৈঋত, অতিক্রান্ত বাতাস
শাদা হয়ে যাওয়া দারুপ্রতিমা
তাপপ্রবণ করাতের দাগ
লবণ আর নির্মম আঙুল

প্রকারান্তরে একটি যুদ্ধের পর
দরজাটি নেমে আসছে রাস্তায়

প্রস্তাবনা, চ্যুত অক্ষরের নির্ণয়ের দিকে
উড়ে যাচ্ছে ফেঁসে যাওয়া চৌকাঠ

অঘ্রাণের কবিতা ১


   প্রিয় জিম করবেট......
                                         -নীলাদ্রি বাগচী

১০।।
ভিতর বিসুখ জানে অসুখের অন্য নাম গলি। শ্রুতির অতলে বসে দিবারাত্র জপে মিশে শান্তি ফিরে এলো ভোরবেলা। ছদ্ম ক্ষোভে অনুত্তীর্ণ ঝুঁকে আছে বালতি ভরা জলে। ওপারে প্রখর ঋতু- খোলা চুল, পোশাক বদল। মধ্যে কাঁপা মনিটরে ঈশ্বর স্বপ্নে পাওয়া সোনা। রিমোটের লাল সুতো পলা ও কুণ্ডলে এক বিশেষণহীন। সাধারণ বিশেষ্যের অতি সাধারণ এই দোষত্রুটি করজোড় ঝুঁকে যাবে ডানে। তাঁবুর জিনিসপত্রে হেঁটে আসা সতের মাইল ব্যর্থতা শিস দেবে ঋতুর বাতাসে। দরজার মুখে কাঁটাঝোপ গুঁজে অবশেষে ঘুম যাবে, দীর্ঘরাত্রি শেষ করে শস্যহীন জমি পাহারায়...

১১।।
নখ দাঁতের নীতির জগতে পা বাড়ালো ভবিষ্যৎ
পরবর্তী বত্রিশ বছর
আরও ভয়ঙ্করে বুঝবে          দৃঢ় হবে
সুদীর্ঘ রাত পাহারায়

ধোঁয়াটে লন্ঠনের আভা 
মৃত ঘুরালের মাংসে  গ্রামে আস্থা   রেশন জোগান

প্রায় ভগবান এই মারটিন হেনরিকে
নিঃসঙ্গ পাইন গাছে একাকী হেলানে ছেড়ে রেখে

বেড়ে উঠবে কুমায়ুন

ঢেঁকিশাকে রিংগালে আচ্ছাদিত নিবিড় সংকেতে