জেগে আছি... বেঁচে আছি
-পিয়াল রায়
পোকাটা আমাকে গ্রাস করতে চাইছে
ওর গুঁড়ি মেরে এগিয়ে আসা টের পাচ্ছি
মাথার ভিতরটা অসম্ভব ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে
টের পাচ্ছি অথচ চোখ খুলতে পারছি না পোকাটার রোমশ কন্টকিত শুঁড়,
দেহের সামনে পিছনে কর্ষিকা...
উফফ কী বিভৎস থলথলে !
দুটো চোখে একটুও খোলা জায়গা নেই
যেখান দিয়ে আলো আসতে পারে যেতে পারে
পোকাটার মনের অবিরাম অস্থিরতা তাকে
টেনে নিয়ে যাচ্ছে কোনো অচেনা দুর্যোগের দিকে
আমি বুঝতে পারছি কিন্তু আগামী থেকে
ভেসে আসা কোনো বার্তা যা জীবনকে
গুনেগেঁথে নিতে অভ্যস্ত, তাকে বোঝাতে পারছি না
চোখ খুলতে না পারার অসহায়তা আমাকে ডুবিয়ে মারছে
মৃত্যুতে আমি ভীত নই
আমি ভয় পাচ্ছি, এই বোধটাই আমাকে শেষ
করে দিতে চাইছে ভিতরে ভিতরে
পোকাটা বিষাক্ত
তারচেয়েও ভয়াবহ হল ও বিষের অস্তিত্ব সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল
এতটাই যে ওর শরীর থেকে বেরিয়ে আসা
বদগন্ধ একটু উঁচুতে তুলে ধরলেই নাশ হতে
পারে লৌহগোলোকও
এসব নিখুঁত পরিকল্পনা
আমি জানতাম ওর অস্তিত্বকে অস্বীকার
করাটাই একমাত্র মেরে ফেলতে পারে ওকে
আসন্ন এই সময়ে দাঁড়িয়ে জপ করতে থাকি
আমার যুগ যুগ ধরে বহমান আস্থার
ধ্বনিটিকে
আমার সমগ্র জীবন, আমার স্বেচ্ছাকৃত
আনন্দপ্লাবন আমি সমর্পণ করি নিভৃত এক ছায়ার
কাছে
ধ্যানমৌন সে বুদ্ধের নামে উৎসর্গ করি আমার উচ্চারণসকল
সুতোর মতো জড়িয়ে নিতে থাকি পায়ের নিচের সজীব দূর্বাদল
আরো একটু শ্বাস নিই খোলা আকাশের
মেঘ,ধান, প্রজাপতির গন্ধে ঢাকা পড়ে যায়
অর্থহীন খোঁয়াড়ি