অন্তরঙ্গ অর্কেস্ট্রা
-প্রদীপ চক্রবর্তী
১/
ক/
মেঘলা শালজঙ্গলে হারিয়ে গেলাম
পিয়াবাবরি ... পিয়াবাবরি ...পিয়াবাবরি...
বলে ডেকে গেল ঠিক তিনবার
এক আজনবি পাখি
তার ডাক কাচরঙ পাল্টে নীল হয়ে যায়
চোখের
ভেতর
কালোকে
ছাপিয়ে
কিভাবে জমাট বাঁধতে থাকে
সাদা কুসুম...
খ/
আমবাগানের বৃষ্টি
বিরহী মেঘলার জানলায়
পুব-পাল্লার দোল
বৃষ্টিতোলা আমবাগানের মাঠে
ঝিঁঝিঁপল মর্মরে বানজারা জঙ্গবাহাদুর
আমের মর্জিমাফিক পতঝর
সে কি ফিরবে লংড্রাইভ শেষে কটেজের রবাব ছুঁয়ে ...?
সাতনম্বর কলেজস্ট্রিট চেনা যাচ্ছে না
পুরনো বাড়িটার ফিরিস্তি বানাল বনান্তের অথৈ হুলো
আষাঢ় - শ্রাবণের আমজঙ্গল খুঁজে খুঁজে
হলুদ রিবন, দুপুর বাগানে আমগাছের আঁকাবাঁকা
হুলোর পথ
নরম ডোরাকাটা রুটি, মিঠেশাঁস মুখে
পড়ন্ত শিশির এক নিমেষ স্থির হল জলের ওপর
তারপর জলেই সেঁধিয়ে গেল নিটোল , নীল
১...২...৩...অভঙ্গুর মুসাম্বির মতো রসালো হরিত হুলো ...
২/
রোদ পোড়া চড়াই উৎরাই ভাঙছে মাটি
আকাশে হাড্ডিসার কয়েক টুকরো মেঘ, ক্বচিৎ একটা খড়কুটোন
প্রজাপতি জানেই না তার ডানার রঙ হাল্কা না ফুরফুরে ...
কে ইতস্তত ? ...জুলাইয়ের নৌকো দোলে কাগজের সাদা অর্গাজমের পর...
মুখ-গলা-বুক-স্তন = তলপেট -যোনি- পা
সর্বত্রই লোকচলাচল কম নদী আর নীর জনতা
বাঁশির আরক গিলে ভোম মেরে ঘরময় ব্রজকিশোর ...
তার স্বরচিত নীলাচল ঘাটে বুঝি নৌকো এসে ভিড়ল ...
কিন্তু কেউ কি দেখল?
লুকোছাপা মেঘের অনাহারী ভেক
শেষ রাতে বর্ষার সূক্ষ্ম গড়াপেটা , ডেকে যাচ্ছে তিয়াস পিয়াস বরবাদি
দরিয়া আভায়
চিবুকের নিচে তেলরঙের মোটা ব্রাশে আঁকা কোরেল ড্র আর ফ্রি-হ্যান্ডস অভিসারিকারা...
ডোকরার ঘোড়া উড়ছে খৈতানের কদম হাওয়ায়
জলৎ আরও দুশো মাইল কৃষ্ণচূড়া
তেল রং শুকিয়ে পর পর তিনটে প্রিন্ট আউট 'ই ব্ল্যাক হোল ...
৩/
বারবি পাখির রিংটোন
টোনালে এককুহুতানদাহ ...
দেখে শুনে তুমি কি বৈরাগী হয়ে যাবে মামু?
মেয়েটি গ্রন্থনা... গ্রন্থ না গোটা শরীরটাই নারং নারং ভোজবাজী ...
কামারের পো তুমি না কারিগর ছিলে?
মোলায়েম পশমিনা তার শরীরের ভার্চুয়াল রিয়ালিটি
একেকটা রেখার একেকটা গল্প
নিরাকার নমনীয় মুলিবাঁশের মতো হাড়
ব্লোপাইপের আগুনে ফুল - পাতা -কলকা - নানা বিমূর্ত নকশায়
কুঁচফলের গুটি
একটি ওজন , অন্যটি পাষাণ
অতএব দাহ্য , ছিন্নতাপ্রবণ ও দোমড়ানো সহজ ...
৪/
গাছ মেঘলা। ভেজাদিনে ঘুঘুর একটানা পাথর।
অবশিষ্ট শস্য ফেড়ে উড়ে গেল অনেকগুলো বক।
ভোরাইয়ের অন্ধ পড়ছে চারঘেরা হাঁটু জল
একলা পিয়াশাল ঘুড়ি থেকে পাহাড়ি মাঞ্জায় লেগে চাঁদ উঠলো তৃতীয় প্রহরে
তুমি দেখছ ভরভরতি মেয়েটা ।
প্রাইস-ট্যাগ বুকে...
স্মার্ট হাতে সেঁটে নিল দগ্ধ বুক ... পুঁজ জমে ওঠা নখ...
এক হাইরাইজের মধ্যে আরেক হাইরাইজের জলভাসি মড়া ...
অসনাক্ত মেয়েটা জোনাকির পোড়া লেগে ফুটে ফুটে ওঠে
তারই পরিপোষক কুটির শিল্পী এক ...
৫/
মন বইছে ইশারায় ... মনের হাফ প্যাকেট ক্লাসিক
থেকে থেকে উগড়ে দিচ্ছে মহিমের ঘোড়াগুলো ...
ঘোড়া
তোরা
তোড়ায় বাঁধা একফোঁটা তরল ঘোড়ায় ডুবিডুবি ডুবডুব পারাম্পা ...
পোড়ামাটির ঘোড়ায় চমৎকার একটা ক্র্যাশ হোক
রোদকোর ছবির কমলা গোধূলি ট্রামলাইন থেকে জিয়া নসটাল ভোর
মেঘলা শেল্ফ থেকে মেঘদূত নামানো নিউটন
নিউটনের রং
হিয়াটিয়া ধরতিরই আপেলবাগান ...
No comments:
Post a Comment